ঢাকা ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাণিজ্য উপদেষ্টা

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে ব্যবসায়ীদের হতাশা যৌক্তিক

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে ব্যবসায়ীদের হতাশা যৌক্তিক

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে হতাশা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের এ হতাশা যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। গতকাল বুধবার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় গ্যাপ এক্সপো-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের প্রসঙ্গ টেনে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যদি এতো বেশি দাম বাড়ানো হয় তবে ব্যবসায়ীদের হতাশ হওয়াটা যৌক্তিক। কিন্তু হতাশ হওয়ার আগে আমি মনে করি, বিগত সরকার ও এ সরকারের মধ্যে একটি পার্থক্য রয়েছে। ওই সরকার বলেছে, এটা হবে, সেটাই হয়েছে এতোদিন। এখন তেমন হবে না।

পেট্রোবাংলা প্রস্তাব করেছে আর সেটা চিন্তা-ভাবনা আলোচনা না করে কার্যকর হবে সেটা নয়। আপনারা এ বিষয় নিয়ে বসুন, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একটি ন্যায্য প্রস্তাবনা দিন। দাবিগুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন করুন। যেটা যৌক্তিক সেটা হবে।

শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, আমি আমার ব্যবসা ত্যাগ করেছি, আপনাদের ব্যবসা এগিয়ে নেয়ার জন্য। যে কোনো যৌক্তিক দাবি নিয়ে আপনারা আসুন। একসঙ্গে বসি, সমস্যাগুলো সমাধান করি। তবে উভয়পক্ষকে সব সমস্যা উপলব্ধি করে সমাধান চিন্তা করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, দাম বাড়ানো বা বিভিন্ন কর বাড়ানো সরকারের পক্ষে কিন্তু স্বস্তিদায়ক নয়। তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে করতে হচ্ছে, কারণ বিগত সরকার এ দেশে বড় নৈরাজ্য করে গেছে। প্রচুর টাকা পাচার করে নিয়েছে। যার ভার এখন বহন করতে হচ্ছে সবাইকে। এতে সাময়িক কষ্ট হলেও ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।

এর আগে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল তার বক্তব্যে বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে শিল্প উদ্যোক্তারা কারখানা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তী সরকার গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাহলে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার আর বর্তমানের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে পার্থক্য কী থাকলো?

তিনি বলেন, আমরা (ব্যবসায়ীরা) না বাঁচলে সরকার বাঁচবে কীভাবে। সরকারের কাছে আর কিছু চাইবো না। এখন বলবো নিজে বাঁচুন। গত ১৫ বছর সরকার কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের সঙ্গে ডায়ালগ করেনি।

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গ্যাসের দাম এতো বেশি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের কিছু জানানো হচ্ছে না। এতে পোশাক খাতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ব্যবসা পরিস্থিতি খুব খারাপ। এ অবস্থায় ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়েও চিন্তা করতে হবে। আমাদের রিজার্ভ, ব্যাংক লুটপাট হয়েছে, এখন গ্র্যাজুয়েশনে গেলে সেটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, এক সময় এ দেশে পোশাক শিল্প বড় হয়েছিল কম খরচে এনার্জি ও শ্রমের কারণে। এখন এসব খাতেই বড় খরচ হচ্ছে। আবার এ দেশে ব্যাংকের লোন দীর্ঘমেয়াদি নয়। সুদের হার চড়া। সবকিছু মিলে ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো নয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত