ঢাকা ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশে এইচএমপিভি শনাক্ত

সাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা জারি
দেশে এইচএমপিভি শনাক্ত

জাপান, মালয়শিয়া ও ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও শনাক্ত হলো চীনে আতঙ্ক ছড়ানো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত রোগী। আক্রান্ত ব্যক্তি একজন নারী, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় বলে জানা গেছে।

গতকাল রোববার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, গত শনিবার আমরা নতুন করে একজনের দেহে এইচএমপিভি সংক্রমণের একটা রিপোর্ট পেয়েছি। তিনি এইচএমপিভিতে আক্রান্তের পাশাপাশি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত। তিনি রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক অবস্থা যতটুকু জেনেছি আগের চেয়ে খানিকটা ভালো। তিনি বলেন, তিনি দেশেই আক্রান্ত হয়েছেন, কারণ তার কোনো বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এটা খুবই স্বাভাবিক। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই আছে। সুতরাং এটা নিয়ে নতুন করে আতঙ্কের কিছু নেই। নতুন করে ২০২৫ সালে এসে আতঙ্ক ছড়ালেও এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন। তিনি বলেন, হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আরো আগে থেকেই আমরা পেয়েছি। কাজেই এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়। তাহমিনা শিরীন আরো বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন সর্বপ্রথম এই পরীক্ষাটি করেছি, তখনই কয়েকজন শনাক্ত পেয়েছিলাম। হয়তো এর আগেই যদি পরীক্ষা করা হতো, তাহলে আগেই শনাক্ত হতো। সুতরাং ঠিক কবে এই ভাইরাসটি দেশে এসেছে, সেটি বলা সম্ভব নয়। তবে প্রতিবছরই কমবেশি শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে এই ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি করল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর জানিয়েছে, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এইচএমপি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং তীব্রতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সি শিশু এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। সেইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী মহিলা এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনা সমূহ-

১. শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগসমূহ হতে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। ২. হাঁচি ও কাশির সময় গামছা বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। ৩. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। ৪. আক্রন্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। ৫. ঘন ঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোন (অন্তত ২০ সেকেন্ড) ৬ অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না। ৭. আপনি জ্বর, কাশি এবং শাসকষ্ট আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) ইউনিট পরিস্থিতির উপর সর্তক দৃষ্টি রাখছে বলে জানানো হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের রোগের মতো ফ্লুর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। যা সাধারণত ২-৫ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তাই আতঙ্কিত হওয়ায় দরকার নাই। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে এইচএমপিভির চিকিৎসার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি নেই এবং এইচএমপিভি প্রতিরোধ করার জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই রোগের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এখন এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এইচএমপিভি ২০০১ সাল থেকেই বাংলাদেশে আছে। এমনকি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে যথেষ্ট অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়েছে। যে কারণে করোনাভাইরাসের মতো এই ভাইরাস নিয়ে এতো ভয়ের কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, ২০০১ সালে বিশ্বে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হয়তো আরো অনেক যুগ আগে থেকেই এই ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল পৃথিবীতে। কেউ কেউ বলছেন, ১৯৫৮ সাল থেকেই রোগটা আছে বলেও যোগসূত্র পাওয়া যায়। সিডিসি বলছে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে কোনো বয়সি মানুষের ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো অসুখ হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এটি শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল তাদের মধ্যেই বেশি দেখা গেছে।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টর চাঁদাবাজি মুক্ত করতে চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টর চাঁদাবাজি মুক্ত করতে চাই। নতুন বাংলাদেশে যাতে আর চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব না থাকে এজন্য সব মহলকে কাজ করতে হবে। এসময়, রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে এবং চাঁজাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলে জানান তিনি। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থিত মাল্টিপ্লান সেন্টারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্টের পরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগতভাবে উন্নতি ঘটেছে। এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় চাঁদাবাজির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা আরো বলেন, আগের যে ইভিল প্র্যাকটিস ছিল সেগুলো থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। আমরা একটা সুন্দর প্র্যাকটিস গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি এ ধরনের অবৈধভাবে কাউকে চাঁদা দিবেন না। কেউ যদি চাঁদা চায় তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন। আপনারা ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) কল করবেন। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হককে কুপিয়ে জখম করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত