শাটডাউনে স্থবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জবি প্রতিনিধি

নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর ও আবাসনের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ডাকা চলমান শাটডাউন কর্মসূচিতে দ্বিতীয় দিনে স্থবির হয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের মতো নেই কর্মচাঞ্চল্য, নেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের ক্যাম্পাসে আনাগোনা। সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। তবে লাইব্রেরিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসতে দেখা গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। বন্ধ রয়েছে সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবন, কন্ট্রোলার অফিস ও মেডিকেল সেন্টার শাটডাউনের আওতামুক্ত থাকায় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এদিন সকালে ভিসি ভবনের মেইন গেইটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা, দ্বিতীয় ফটকটি কর্মকর্তারা যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের মেইনে গেটে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে ঢিলে-ঢালাভাবে কার্যক্রম চলছে।

এর আগে গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় তিন দফা দাবিতে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। পরে গতকাল সোমবার সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। সবশেষ গতকাল রাত ৭টা নাগাদ শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবির দুটি দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয় মন্ত্রণালয়। পরে ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। তবে শাটডাউন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ৫ শাখা থেকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ বিভাগের আওতাধীন ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভা আগামীকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সভাপতিত্বে এ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।

সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে- প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা; প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর; বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হল স্টিল স্ট্রাকচারের মাধ্যমে নির্মাণ; আবাসন সমস্যা নিরসন বিষয়ে আলোচনা এবং বিবিধ প্রসঙ্গ।

অনশনকারী শিক্ষার্থী ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাকছুদুল হক বলেন, ‘আমাদের তিনটি দাবি ছিল, গত সোমবার মন্ত্রণালয় থেকে দুটি দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। বাকি আরেকটি দাবি পর্যালোচনা করবে বলেছে। আজ বুধবার মন্ত্রণালয়ের কার্যবিধি অনুযায়ী শাউডাউন স্থগিত বা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

অনশনে থাকা উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব বলেন, ‘গতকাল মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বস্ত হওয়ার পর আমরা অনশন প্রত্যাহার করি। তবে মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে অংশগ্রহণ পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি চলবে। আমরা আগামীকাল বৈঠকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। তারপরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব শাটডাউনের বিষয়ে।’

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। ২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে। ৩. যতদিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয় ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।