২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি বাতিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ ও ‘পাহাড়ি ছাত্র-জনতা’ হাতাহাতিতে জড়ান। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকালে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এনসিটিবির সামনে অবস্থান নেন ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’র সদস্যরা। পরে বেলা ১২টার দিকে পাহাড়ি ছাত্র ও জনতাদের একটি দল সেখানে পৌঁছালে দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় পুলিশ দুপক্ষকে থামানোর চেষ্টা করলেও মানব ব্যারিকেড ভেঙে এনসিটিবির সামনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা।
‘আদিবাসী’ শব্দ রাখার পক্ষে আন্দোলনকারী বিভূতিভূষণ মাহাতো বলেন, স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির সদস্যরা আগে থেকেই হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তারা আমাদের হুমকিও দিয়েছিল এনসিটিবি ঘেরাও কর্মসূচি না দেওয়ার জন্য। তারা ক্রিকেট স্ট্যাম্পের মাথায় জাতীয় পতাকা নিয়ে প্রস্তুত ছিল হামলা করার জন্য।
অন্যদিকে সংঘর্ষের পরে আবারও এনসিটিবির সামনে অবস্থান নেন ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ সদস্যরা। এ ঘটনায় সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও ১৫ জনের মতো আহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’র আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের জায়গায় এখনও রয়েছি। আমরা তাদের ওপর হামলা চালাইনি। তারাই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রিয়াজুল হাসান বলেন, আমি শুনেছি ১৩ থেকে ১৪ জন আহত হয়েছে। ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়ে এনসিটিবি’র একজনও আহত হয়েছেন। একটি চক্রের ইন্ধনে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা হয়েছে।
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে আদিবাসী শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল পাতা ছেঁড়া নিষেধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্ট’ ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়। এর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়। এতে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।