ঢাকা ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আপনারা এতো অস্থির কেন?

ভারতকে রিজভীর প্রশ্ন
আপনারা এতো অস্থির কেন?

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত কোনোভাবেই স্থির হতে পারছে না মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ভারতকে প্রশ্ন করে রিজভী বলেন, আপনারা এতো অস্থির কেন? আপনারা বাংলাদেশের বিষয়ে কেন যেন এলোমেলো কথা বলছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র উদ্যোগে বাড্ডা রামপুরা বনশ্রীতে শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারা (ভারত) ক্রমাগতভাবে অপপ্রচার, মিথ্যাচার, অপতথ্য দিয়ে কলঙ্ক লেপন করে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ এটা করছে না। শেখ হাসিনার জন্য অত্যন্ত অস্থির হয়ে গেছে।

রিজভী বলেন, ওই নরপিশাচ নারীকে কার সঙ্গে তুলনা করব? আমরা ফেরাউনের কথা বলি, নমরুদের কথা বলি এই নরপিশাচ যেন নমরুদ ফেরাউনের আত্মা নিয়ে লেডি ফেরাউন হয়ে নিজ দেশের শিশু সন্তানদের রক্তপান করতে দ্বিধা করেননি। আজকে এই দুরাচারী নারী শেখ হাসিনার জন্য কেউ কেউ মায়াকান্না করছে, কেউ কুমিরের কান্না করছে এবং যে দেশে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন সেই দেশ যেন কোনোভাবেই স্থির হতে পারছে না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারা ক্রমাগতভাবে অপপ্রচার, মিথ্যাচার, অপতথ্য দিয়ে কলঙ্ক লেপন করে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ এটা করছে না। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর দেশের সাহসী জনতা আর তাদের তারুণ্যের যে উচ্ছ্বাস তাদের যে আত্মদান এটা গৌরবান্বিত হয়েছে পৃথিবীর আটলান্টিকের ওই পার থেকে প্রশান্ত মহাসাগর, ভারত মহাসাগর আরব সাগর প্রত্যেকটি জায়গায়।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘দেশের তরুণ ছাত্র জনতার এই আত্মদানের ঢেউ যেন গোটা বিশ্বজনতাকে এক ধরনের চমক দিয়েছে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ অপতথ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। কোথায় অত্যাচার হচ্ছে? অত্যাচার তো করছেন আপনারা। দিল্লিতে জুমার নামাজ আদায়ের সময়ে পুলিশ দিয়ে মুসল্লিদের আঘাত করা হয়েছে। তাদের লাথি মেরে ফেলে দেয়া হয়েছে।

ভারতে সংখ্যালঘু নিপীড়ন হয় এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ৪০০ বছরে সম্রাট বাবর যে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন সেই মসজিদকে ভেঙেচুরে তারা সেখানে মন্দির নির্মাণ করেছে। সংখ্যালঘুদের ওপর যত অত্যাচার অবিচার অনাচার ওটা তো হয় ভারতেই, বাংলাদেশে হয় না। বাংলাদেশের হিন্দু মুসলমান খ্রিষ্টান হাতে হাত ধরে ঘোরাফেরা করে। আমরা তো সবাই মিলে একই হাটে যাই, একই হাটে বাজার করি এই ঐতিহ্য আমাদের পুরোনো। অথচ আমাদের সেই মহান ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করার জন্য ভারত থেকে বারবার আমাদের বিরুদ্ধে অপতথ্য দেওয়া হচ্ছে। বিরুদ্ধে কলঙ্ক লেপন করা হচ্ছে। যখন তারা দেখল এটা করেও লাভ হচ্ছে না এখন তারা কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়া যে আপনারা দিচ্ছেন বাংলাদেশের বিজিবির সঙ্গে কি আলোচনা করেছেন? কোথায় কীভাবে দেবেন? আপনারা যা দেখেন যা করেন, তা করেন আধিপত্যবাদী চিন্তা চেতনা থেকে। আপনারা বড় দেশ অনেক লোকসংখ্যা। এই অহংকার নিয়ে আপনারা কাজ করেন।

ভারতের উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আপনারা দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাপলে বাংলাদেশের মানুষের দেশপ্রেম, বাংলাদেশের মানুষের জাতীয়তাবাদী চেতনা, বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার অঙ্গীকার এটা অনেক বেশি শক্তিশালী। ভারতে আপনাদের কত অস্ত্র আছে, সেনাবাহিনী কত বড়, ওইটা দিয়ে মাপলে আপনারা পারবেন না। আপনারা এতো অস্থির কেন? আপনারা বাংলাদেশের বিষয়ে কেন যেন এলোমেলো কথা বলছেন। কারণ আপনারা কোনোভাবেই শেখ হাসিনার পতন কামনা করেননি। আপনাদের স্বার্থ শেখ হাসিনা দেখত, বাংলাদেশের স্বার্থ সে দেখত না। কারণ শেখ হাসিনা জানতো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে তিনি কোনোদিনও জিততে পারবেন না। সেই কারণে শেখ হাসিনা সব সময় দিল্লির একটা শেল্টার চেয়েছে। দিল্লির একটা আশ্রয় চেয়েছে।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই তো বলেছিলেন ভারতকে আমি যা দিয়েছি ভারত সারাজীবন মনে রাখবে। এই কারণেই আজকে ভারতের নীতিনির্ধারকরা কিছু রাজনৈতিক দল অত্যন্ত অস্থির হয়ে গেছে শেখ হাসিনার জন্য।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, অবিলম্বে রাজনৈতিক শক্তির কাছে ক্ষমতা নিয়ে আসতে হবে। অবাধ এবং সুষ্ঠ নির্বাচন যেটি আটকে দেয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা দিনের ভোট রাতে করেছেন। মিডনাইট নির্বাচন করেছেন, ভোটারশূন্য নির্বাচন করেছেন। সেটির যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সামনের দিনে যা কিছু করার দরকার সেটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে করতে হবে।

‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সঞ্চালনায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক এমএ কাইয়ুম, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দীন বকুল প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত