বরিশালে জামায়াত আমির ও চরমোনাই পীরের সংবাদ সম্মেলন
ইসলামী দলগুলো ভোটকেন্দ্রে একটি বাক্স পাঠাতে চায়
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রসঙ্গে জনসাধারণের কাছে দোয়া চেয়েছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তারা জানিয়েছেন, ইসলামী দলগুলো ভোটকেন্দ্রে একটি বাক্স পাঠানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই মাদ্রাসা পরিদর্শনকালে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান ও পীর রেজাউল করীম যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা মূলত ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা দেখতে চাই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবো না। তাই যথাযথ সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে শতকরা ৯১ জন নিজেকে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বাকি ৯ ভাগের মধ্যে কিছু ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও কিছু নাস্তিকও থাকতে পারে। সব মিলিয়ে, এই বাংলাদেশ আমাদের। জামায়াত আমির বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্ণ হলেও আমরা স্বাধীন দেশের মর্যাদা পাইনি। এর মূল কারণ হলো দুর্নীতি ও দুঃশাসন। যেখানে আল্লাহর বিধান থাকবে না, সেখানে দুর্নীতি ও অশাসন আসবেই। নামাজের বিধান মেনে যদি আমরা সমাজে আল্লাহর বিধান মানতাম, তাহলে দেশ এভাবে অবস্থা পেত না। কিছু মানা ও কিছু না মানার কারণে দেশ এই অবস্থায় এসেছে। আমরা পুরোপুরি আল্লাহর বিধান মেনে চলতে চাই, তাই আমরা সারা দেশবাসীর সহযোগিতা চাই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মিলনমেলা আল্লাহর জন্য। এই মিলন রাজনীতির মাঠেও থাকবে। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। জনগণের প্রত্যাশা, নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইসলামী দলগুলোর যেন একটি বাক্স থাকে।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন তা শেষ হলে নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগের সব ষড়যন্ত্র অতীতে ব্যর্থ হয়েছে, ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবে।’
ভারত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী। আমরা ভারতের কাছ থেকে আশা করি, কাঁটাতারের বেড়া যেন না থাকে। এটি আমাদের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে হয়েছে।’ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দ্রব্যমূল্য দ্রুত কমে আসুক। এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।’ চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ইসলামের পক্ষে একটি বাক্স কেন্দ্রে পাঠানোর প্রচেষ্টা আগেও ছিল, এখনও চলছে। বিভিন্ন কৌশলে গত ৫৩ বছর ইসলামী দলগুলোকে দূরে রাখা হয়েছে। ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতার মাধ্যমে ইসলামী পক্ষের জন্য একটি ভালো ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। তবে যদি আমরা সময়োপযোগী বিচার না করি, তবে তা আমাদের জন্য অকল্যাণকর হতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন এই দুই দল চায়।’ এসময় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর ইসলাম চরমোনাইর প্রথম পীর মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাকের কবর জিয়ারত করেন। দুপুরে খাবার গ্রহণ শেষে ডা. শফিকুর বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে দলের কর্মিসভায় যোগ দেন।