ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি ইসলামি শরিয়াহবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বিএনপি। গতকাল সোমবার দুপুরে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান। ঢাকার পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কার্যালয়ে ওই বৈঠক হয়। ফখরুল বলেন, ‘আজকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মাওলানা সৈয়দ রেজাউল করীম সাহেবের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। এই আলোচনায় আমরা মোটামুটি ১০টি বিষয়ে একমত হয়েছি।’ ঐকমত্যে পৌঁছানো ১০ বিষয় হচ্ছে- ১. আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম টেকসই রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা; ২. দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচার; ৩. ভোটাধিকারসহ সব ধরনের মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়া; ৪. ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ; ৫. দ্র্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ও সব অধিকারবঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিকীকরণ; ৬. আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা; ৭. ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা; ৮. আগামীতে আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেই ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকা; ৯. ইসলামি শরিয়াহবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়া এবং ইসলামবিরোধী কোনো কথা কেউ না বলা; ১০. প্রশাসনে বিদ্যমান ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা। আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘দেশ, মানবতা এবং রাজনীতির ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব আপনাদের (গণমাধ্যমে) সামনে উপস্থাপন করেছেন। এগুলো নিয়ে আমাদেরও একই কথা।’ নির্বাচনের সূচির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা আগে থেকেই বলেছি যে, দ্রুত সময়ে আমরা যে শব্দটা ব্যবহার করেছি যে- খুব বেশি সময় না নিয়ে যৌক্তিক। ‘সেই যৌক্তিক সময়টা আমরা বলেছি, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। এরকম একটা কথা আমরা বলেছি। আর ৬ মাস তো প্রায় চলেই গেল; আর এক বছরের মধ্যেই সুন্দর একটা জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে সরকার- এটাই মূলত আমাদের কথা।’ চরমোনাই পীর বলেন, ‘আমাদের দুই দলের মধ্যে আলোচনা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে।’ বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।