ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জামায়াতিকরণ করা হয়েছে

রুহুল কবির রিজভী
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জামায়াতিকরণ করা হয়েছে

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জামায়াতিকরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনায় এই দোয়ার আয়োজন করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএব)।

রিজভী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিশেষ দল দখল করে নিয়েছে। সমস্ত বড় বড় ইউনিভার্সিটিগুলোকে জামায়াতিকরণ করা হয়েছে। পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। সমগ্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জামায়াতিকরণ করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত ভয়ংকর বিষয়। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে জামায়াতি চেতনার লোকজনকে বসানো হয়েছে। আমাদের সমর্থিত লোকজন যেমনিভাবে আওয়ামী লীগের আমলে বঞ্চিত হয়েছে, তেমনিভাবে এখনো বঞ্চিত হচ্ছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) বলেছে, রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। এগুলো তো হাসিনার কথার প্রতিধ্বনি। হাসিনা সরকার এবং রাষ্ট্রকে এক করে দিয়েছে। এই সরকার তো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল। আর গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে, আলোচনা-সমালোচনা, তীব্র সমালোচনা হবে এবং সরকার সব শ্রবণ করবে। এরপরে জনকল্যাণের পক্ষে যেসমস্ত সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার, সেসমস্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে, দৃঢ়তার সঙ্গে বাস্তবায়ন করবে। এটাই তো সরকার।

রিজভী বলেন, রাষ্ট্র আলাদা জিনিস। রাষ্ট্রের বিরোধিতা অপরাধমূলক। কিন্তু, সরকারের বিরোধিতা তো অপরাধমূলক নয়। সরকারের বিরুদ্ধে যত সমালোচনা হবে, সেই সরকার যদি সৎ এবং জনগণের মুখাপেক্ষীর সরকার হয়, তাহলে সেই সরকার তো সমালোচনাকে আমন্ত্রণ করবে। অথচ মাউশি বলে দিল সরকার এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জনপ্রশাসনের সচিবের নামে কোটি টাকার দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। তারপরও সে কি করে সেখানে বহাল থাকে? এ ধরনের একটা ঘটনা জানার পরেও, উনি কি করে জনপ্রশাসনের সচিব হিসেবে রয়েছেন।

রিজভী বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নানাভাবে মনে করছেন, জুলাই-আগস্টের বিজয় শুধু তাদের। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার; তাদের সরকার। আমাদের মনে হয়, কোনো করণীয় ছিল না। কোনো অবদান নেই। আমরা ১/১১ এর সরকারকে বলতাম সেনা সমর্থিত সরকার। আর এখন অনেকেই বলছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই বিশেষ দল সমর্থিত সরকার। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেটা প্রমাণ হচ্ছে। রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তো বিপ্লবী সরকার হওয়ার কথা ছিল। সমস্ত দোসরদের উৎপাটন করে জনগণের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছিল তাদের দিয়েই তো প্রশাসন চলার কথা। সেই দোসররা আবার সচিবালয়ের ভেতরে মিছিল করে, দাবিদাওয়া পেশ করে। তারা মনে করছে এটা তাদের ন্যায্য পাওনা। পৃথিবীর বহুদেশে বিপ্লবের পর থেকে টোটাল নতুন কাঠামো তৈরি করে সেখানে নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থা হয়েছে। আজকে কী করে সচিবালয়ের ভেতরে সেই পুরোনো দোসরদের লোকেরা কীভাবে আন্দোলন করে এবং ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়? এটাতো জনগণ প্রত্যাশা করেনি এবং এই সরকার ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করলেন। এখানে গণবিরোধী আমলাদের পরামর্শে এটা হয়েছে। শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র সমাজ থেকে নীতি নৈতিকতা একেবারে উপড়ে ফেলে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এত জায়গা জমি লাগবে কেন? ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করতে হবে কেন? কিন্তু তিনি করেছেন। এগুলো যদি না করতেন, তাহলে টিকে থাকতে পারতেন। তাকে পালাতে হতো না। উনি পালিয়েছেন। কারণ, ওনার মনের মধ্যে তো ভয় আছে। তিনি আয়নাঘর করেছেন, ক্রস ফায়ার করেছেন। শুধুমাত্র তার পথের কাঁটা সরানোর জন্য এগুলো করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত