ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলাসহ প্রতিটি খাতকে ধ্বংস করে ফেলেছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো টেনে তুলতে সংস্কার প্রক্রিয়ায় নজর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর এসব সংস্কারে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ঢাকায় সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডার প্রতি জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন আন্তোনিও গুতেরেস।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘আমি সংস্কার কর্মসূচির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা আপনাদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোত্তম সফলতা কামনা করি। যে কোনো সহযোগিতা লাগলে আমাদের জানান।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই সংস্কার প্রক্রিয়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের একটি ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে সংস্কার প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে।’ জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর কয়েকবার অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এবার তিনি ঢাকায় চার দিনের সফরে এসে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। গুতেরেস বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে রমজান মাসে বাংলাদেশে এসেছেন। গতকাল কক্সবাজারে উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিকের সঙ্গে ইফতার করেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়।
ইফতার পূর্ব রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে টানা ৫ মিনিটের অধিক আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তিনি বলেন, ‘অনরার দুঃখ কষ্ট বুঝিলইবার লাই ও আইস্সে। ও বুঝি লই দুনিয়ার মাইনসরে জানাইব অনরারে অনরার দেশত ফেরত পাঠাইবার লাই কি গরার দরকার ইন গরিব। (আপনাদের দুঃখ-কষ্ট বোঝার জন্য মহাসচিব এসেছেন। তিনি বুঝে বিশ্ববাসীকে জানাবেন এবং আপনাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কাজ করবেন।)’
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কেউ ওনাকে দাওয়াত দিয়ে আনতে পারেন না। উনি নিজ থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা দেখতে এসেছেন। আশা করছি, রোহিঙ্গা সমস্যার একটি সমাধান হবে।’ সব সময় প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের সাথে রয়েছেন জানিয়ে বলেন, ‘আমি আপনার সাথে আছি। আপনার জন্য নিরাপদ স্বদেশ ফেরত পাঠানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’ গতকাল দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টার বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি চার্টার্ড ফ্লাইট কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। জাতিসংঘের মহাসচিব কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা সেরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের উদ্দেশে রওনা দেন। বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে রোাহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিবের রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টাসহ জাতিসংঘ মহাসচিব উখিয়ায় ১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন।
কক্সবাজার শুধু পর্যটন শহরই নয়, বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র বলে মন্তব্য করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে। সামুদ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব। নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনো সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করতে পারলে সকলের ভাগ্য বদলে যাবে।’ তিনি লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কি না। কেননা, কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রপ্তানি করার সক্ষমতা রয়েছে। তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন। স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে। স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান। মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দর ও খুরুশকুল পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শন: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। গতকাল বিকেলে তিনি জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য নির্মিত এই প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন এবং চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন। পরিদর্শনকালে প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিরাজুল ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, ১২৯টি ভবনে ৪ হাজার ২১৮ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের পর্যটন ও উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘আঁরা হতা হৈবল্যা নু আইয়্যি, অনরাত্তু জাইনতো আইস্যিদে।’ (আমরা কথা বলার জন্য আসিনি, আপনাদের কাছ থেকে জানতে এসেছি)।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আমিনুল হাসিব প্রধান উপদেষ্টাকে বিমানবন্দরের নির্মাণকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের তৈরি শিল্পকর্ম দেখলেন জাতিসংঘ মহাসচিব : কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সফরের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গাদের তৈরি নানা হস্তশিল্প ও দৈনন্দিন ব্যবহারের পণ্য পরিদর্শন করেছেন। তিনি মাল্টিপারপাস সেন্টারে যান, যেখানে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের তৈরি করা পোশাক, ব্যাগ, বাঁশ ও পাটের পণ্য, কাঠের শিল্পকর্ম এবং অন্যান্য হস্তশিল্প দেখেন। জাতিসংঘ মহাসচিব এসব পণ্য দেখে প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গাদের স্বনির্ভর হওয়ার প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবকে গণহত্যার বর্ণনা দিলেন রোহিঙ্গারা : কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং মিয়ানমারে তাদের ওপর চালানো গণহত্যার মর্মস্পর্শী বর্ণনা শোনেন। বর্ধিত ক্যাম্প ২০, এইচ/২, ব্লক-৩-এর বাসিন্দা বদর আলম বলেন, ‘আমাদের মাঝিরা (রোহিঙ্গা নেতা) জাতিসংঘ মহাসচিবকে মিয়ানমারের অত্যাচারের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। কিভাবে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, চোখের সামনে স্বজনদের হত্যা করা হয়েছে, গণহত্যা চালানো হয়েছে—সবকিছু তুলে ধরা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দেয়া শর্তগুলো মেনে নিলে আমরা নিজ দেশে ফিরে যেতে রাজি। এই বিষয়টি জাতিসংঘ মহাসচিব ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা।’ লার্নিং সেন্টারের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব গভীর মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনেন এবং মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার কারণ জানতে চান। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আশ্বাস দেন। এরপর তারা রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। বিকেলে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করেন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছর রমজানে জাতিসংঘের মহাসচিব কোনো না কোনো দেশে গিয়ে মুসলিমদের সঙ্গে ইফতার করেন। সৌভাগ্যবশত, এটি এবার বাংলাদেশে হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘ মহাসচিব দুস্থ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন এবং এর মাধ্যমে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, বিশ্বের এই গুরুত্বপূর্ণ নেতা রোহিঙ্গাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।’
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিব একটি ওয়াচ টাওয়ারে উঠে আশ্রয়শিবিরের বর্তমান চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন। জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ (আইওএম) বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরাও সেবা কার্যক্রমের হালচাল তুলে ধরেন। খাদ্য সহায়তা কমে আসা এবং খাদ্য সংকট তৈরি হওয়ার বিষয়টি মহাসচিববে জানান। পরিদর্শনকালে জাতিসংঘের মহাসচিব বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৮) একটি লার্নিং সেন্টার, ইউএনএইচসিআর এবং ডব্লিউএফপির সেবা ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে যান এসব দেখেন। পৃথক তিনটি বৈঠকে রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা, তরুণ ও নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন দুইজন। উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চায়। এজন্য মিয়ানমারে শান্তি পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে আমি দুটি স্পষ্ট বার্তা পেয়েছি। প্রথমত, আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করে কোন ধরনের বৈষম্যের শিকার তারা যেন না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।’ জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা আরও ভালো পরিবেশ চায় ক্যাম্পে। দুর্ভাগ্যবশত যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য অনেক দেশ সম্প্রতি নাটকীয়ভাবে মানবিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। এই কারণে আমাদের মানবিক সহায়তার মধ্যে খাবারের রেশন কমাতে হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা হ্রাস নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী আমি দেখিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলতে বসেছে। মানবিক সহায়তা হ্রাস করা একটি অপরাধ’ উল্লেখ করে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখন প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করছে। কিন্তু তখন আবার বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তা সংকুচিত হচ্ছে।