ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায়

ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায়

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মো. নুরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। এদিন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইশরাক হোসেন। রায়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে সরকারের গেজেট বাতিল করা হয়। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।

জানা যায়, সিটি নির্বাচনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে ডিএসসিসি নির্বাচন ও ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।

মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট আটজনকে বিবাদী করা হয়।

ইশরাকের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলাম। তাকে মেয়র হিসেব ঘোষণার আবেদন করেছিলাম। আদালত আজ আমাদের পক্ষে রায় দিলেন। ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উত্তরে ও ফজলে নূর তাপস দক্ষিণের মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের গেজেট প্রকাশ করেন। তারা শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিকে, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর এরই মধ্যে ৫ বছর পার হয়েছে। ফলে এ রায়ের পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, মেয়র পদে ইশরাক হোসেন বসতে পারবেন কি না?

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ইশরাক হোসেনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাহেরুল ইসলাম তৌহিদের কাছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের পাঁচবছর পার হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে ইশরাক হোসেনের মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখবে। আদালত মেয়র ঘোষণা করেছেন। কবে, কীভাবে তিনি মেয়রের দায়িত্ব পাবেন সেটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়।

অ্যাডভোকেট তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ আরও বলেন, ২০২০ সালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছিল। প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় সিল মারতে বাধ্য করা হয়েছিল। এজন্য তখন আমরা মামলা করেছিলাম।

অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে ডিএসসিসি নির্বাচন ও ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন ও দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট আটজনকে বিবাদী করা হয়।

ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলাম। একই সঙ্গে তাকে (ইশরাক হোসেন) মেয়র হিসেবে ঘোষণার আবেদন করি। আদালত আজ আমাদের পক্ষে রায় দিলেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উত্তরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণে আরেক আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের গেজেট প্রকাশ করেন। এরপর থেকে তারা শপথ নিয়ে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

নির্বাচনি আইন অনুযায়ী, ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে সংক্ষুব্ধ প্রার্থী বা তার মনোনীত ব্যক্তিকে আবেদন করতে হয়। মামলার পর পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবেন ট্রাইব্যুনাল। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি রায়ে খুশি না হলে ৩০ দিনের মধ্যে তিনি নির্বাচনি আপিল ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন। নির্বাচনি আপিল ট্রাইব্যুনাল ১২০ দিনের মধ্যে আপিলটি নিষ্পত্তি করবেন।

এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে আদালতের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক হোসেন বলেছেন, শপথ নেব কি না তা দলীয় সিদ্ধান্ত। গতকাল বিকালে নয়াপল্টনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন। ইশরাক বলেন, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন হয়। ওই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আজ আদালতে যথাযথ রায়ের মাধ্যমে আমাকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে এবং ফজলে নূর তাপসের গেজেট বাতিল করে।

ইশরাক বলেন, আমি এবং আমার দলের পক্ষ থেকে আদালতকে সম্মান জানাই। শপথ নেব কি না এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। এসময় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে গত বছরের ১ অক্টোবর নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ঘোষণা করেন। চসিক নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলেন বিএনপির এ নেতা।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। যদিও ওই সময় ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ করেছিলেন বিএনপির প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত