আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এক মাস পেছানোর দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পর শিক্ষা বোর্ড সাফ জানিয়ে দিয়েছে, পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, শিক্ষার্থীদের এ দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক মনে করেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। এরইমধ্যে জুন মাসের এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। গতকাল বিকালে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার? গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এরইমধ্যে পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ। সব কেন্দ্রে পরীক্ষার সরঞ্জামাদি পাঠানো শেষ। এই মুহূর্তে পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। পরীক্ষা পেছানোর যেসব দাবি করেছে সেগুলোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাদের এসব দাবি আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার? বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে প্রায় সব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়ার পক্ষে। শিক্ষার্থী নামধারী কিছু কিছু ব্যক্তি ফেসবুকের মাধ্যমে পরীক্ষা পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে। তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের গুজবে কান না দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করেন।
পরীক্ষা পেছানোর দাবি উড়িয়ে দিয়ে বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি না হলে নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা হবে। তাই পরীক্ষার্থীদের এখনই চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
অসহযোগ আন্দোলনের ডাক : আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছে একদল পরীক্ষার্থী। তারা আরও অন্তত এক মাস পর পরীক্ষা আয়োজন এবং প্রতিটি পরীক্ষার মাঝে তিন-চার দিন বিরতি রাখার দাবি তুলেছে। দাবি তোলা পরীক্ষার্থীরা বলছে, পরীক্ষা পেছানোসহ দুই দফা দাবি আদায়ে তারা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি করবে। একই সঙ্গে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। পরীক্ষায় অংশ না নেয়াসহ সব ধরনের কার্যক্রমে তারা সহযোগিতা করবে না। গতকাল ‘এসএসসি পরীক্ষার্থী ২০২৫’-এর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি-দাওয়া তুলে ধরে পরীক্ষার্থীরা। এতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে ১৯ লাখ ২৮ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হয়নি। ঈদের পরপরই পরীক্ষা হওয়ায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে ফল বিপর্যয় হতে পারে। তাই এক মাস সময় দিলে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে তারা।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা আরও উল্লেখ করে, এপ্রিল ও মে মাসে প্রচণ্ড গরম পড়ে। গরমে একটানা পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। গরমের মধ্যে টানা পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বে। এছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার কেন্দ্রও দূরে। তাই প্রত্যেক পরীক্ষায় তিন-চার দিন বন্ধ দিয়ে নতুন রুটিন করতে হবে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রকাশিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১০ এপ্রিল থেকে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষার লিখিত বা তত্ত্বীয় অংশ শেষ হবে ১৩ মে। আর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলের লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১৫ মে। এরপর ২২ মে পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।