ঢাকা শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ

আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ

জাজিরা উপজেলার বিলাসপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই শতাধিক ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ককটেল বোমা বিষ্ফোরণ ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। সংঘর্ষে এক জনের হাতের কব্জি ও আরেক জনের পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন হয়েগেছে। আহতদেরকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহ দুই জনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। গতকাল শনিবার সকাল আনুমানিক ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের কাজিয়ারচর আলীমুদ্দিন মাদবর কান্দি, দাইমুদ্দিন খলিফা কান্দি, আহসান উল্লাহ মুন্সি কান্দি, বিলাশপুর মুলাই বেপারী কান্দি ও মেহের আলী মাদবর কান্দি এলাকায় হলিউড স্টাইলে সিনেমাটিক এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বেপারী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জাজিরা উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য জলিল মাদবরের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই বিবাদ চলে আসছে। এ বিষয় নিয়ে গত শুক্রবার বিকালে বিলাশপুরের কাজিয়ারচর এলাকায় এই দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ গতকাল শনিবার সকালে এই দুই পক্ষের সমর্থকরা বালতিভর্তি ককটেল বোমা নিয়ে ও দেশীয় অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার সময় মুহুর্মুহু ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ও সংঘর্ষের ঘটনায় মারুফ মাল, সুজন মাদবর, হাসান মুন্সি, বিনা বেগম, সাকিব মাদবর, রেজাউল বেপারী, রিফাত, সজিব খলিফা, কাউসার, নাঈম, কামাল, দেলায়ার খলিফা, নাসির মাদবর (৪৫), কাজল খা (৫৫), শহর আলী মাদবরসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে মারুফ মাল নামে এক জনের হাতের কব্জি ও সুজন মাদবর নামে একজনের পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহতদের অধিকাংশই জাজিরা উপজেলা স্বস্থ্যকমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েছে। এদিকে দুই পক্ষের ককটেল বিষ্ফোরণের সিনেমাটিক ভিডিও দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের বিষয়ে জলিল মাদবরের সমর্থকদের কাউকেই বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।

বিলাসপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই জলিল মাদবর ও তার সমর্থকরা আমাদের ক্ষুব্ধ। ঈদের পর থেকে এলাকায় তার ভাই বিদ্যুত মাদবর ও সমর্থক সালেক মাদবরের নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে হামলার পরিকল্পনা করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ তারা শতাধিক লোক মুহুর্মুহু ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। নিজেদের রক্ষার চেষ্টাকালে আমার অন্তত ১৫-২০ জন সমর্থক গুরুতর আহত হয়। পরিকল্পিত হামলাকারীদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। জাজিরা থানার ওসি মুহাম্মদ দুলাল আখন্দ বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিলাশপুরের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও জলিল মাদবর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে উভয় পক্ষের লোকজনই ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশের সঙ্গে র‌্যাব ও সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত