ঢাকা সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ইসরায়েলে হামাসের রকেট হামলা

* যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুকে চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প * ‘নমনীয়’ হচ্ছেন নেতানিয়াহু * যুদ্ধ বন্ধ হলেই কেবল বন্দি মুক্তি * মুক্তির আকুতি জানিয়ে ইসরায়েলি বন্দির ভিডিও * ‘মোরাগ’ করিডোর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে
ইসরায়েলে হামাসের রকেট হামলা

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পূর্ণ সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে সেখানে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর মধ্যেই ইসরায়েলে তিনটি রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। টেলিগ্রাম চ্যানেলে শনিবার এক বিবৃতিতে এ হামলার কথা স্বীকার করেছে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেডস। তারা বলেছেন, ইসরায়েলের নির ইৎজাক এলাকায় ‘রাজুম’ নামের স্বল্পপাল্লার তিনটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এর আগে ইসরায়েল জানায়, গাজা থেকে ছোড়া তিনটি রকেট তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছেন। কয়েকদিন আগেও গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের আশদোদ শহরে ১০টি রকেট হামলা চালিয়েছিল হামাস। বিশ্লেষকরা বলছেন, সর্বাত্মক যুদ্ধের ১৮ মাসে এসে ইসরায়েল ও মার্কিন অস্ত্রে যখন গাজা জর্জরিত, তখন নিয়মিত এই রকেট হামলা হামাসের সামরিক সক্ষমতাকে প্রকাশ করছে। তারা জানান দিচ্ছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুত লড়াই থেকে তারা পিছু হটবেন না।

যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুকে চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প : গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাপ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ। ১৮ মাস ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে ইসরায়েলকে অস্ত্র দিয়ে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গাজা যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ধৈর্য কমে আসছে এবং তিনি গাজায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ চান। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর সাংবাদিকদের সামনে নেতানিয়াহুর প্রশংসা করেন তিনি। তবে ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুর প্রশংসা করলেও গাজা যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত যে সংশয় আছে, সেটি বিবেচনা করে তিনি নেতানিয়াহুকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হামাসের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করার জন্য চাপ দিয়েছেন, যেন জীবিত ও মৃত ৫৯ ইসরায়েলি বন্দিকে গাজা থেকে ফিরিয়ে আনা যায়। ট্রাম্প চান, ইসরায়েল এখন হামাসের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি করুক, যার মাধ্যমে সব বন্দি মুক্তি পাবেন এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারকে জানানো হয়েছে যে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন চুক্তি নিয়ে কাজ করছে। ইয়েদিওথ আহরোনোথ বলেছে, গাজা যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ। তিনি চান, গাজা যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করুক। তাছাড়া ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যে পারমাণবিক আলোচনা শুরু করেছে, এটিও ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনার অংশ। এদিকে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। এতে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আর, এ বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে পরে জানানো হয়, ইলকানা বোহবোত এবং রোম ব্রাসলাভস্কি নামে দুই বন্দির পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। ওই সময় তিনি তাদের আশ্বস্ত করেন, তাদের প্রিয়জনদের মুক্তির জন্য আলোচনা চলমান রয়েছে।

‘নমনীয়’ হচ্ছেন নেতানিয়াহু : হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে আসতে নিজেদের কঠোর অবস্থান থেকে ইসরায়েল ‘নমনীয়’ হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু ১৮ মার্চ চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর থেকে আবারও চুক্তির জন্য চেষ্টা চালাতে থাকে কাতার ও মিসর। তবে ইসরায়েল জানায়, যুদ্ধবিরতির পুনস্থাপন করতে তাদের ১১ জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু হামাস জানায়, তারা পাঁচ বন্দিকে মুক্তি দেবেন। এই পরিস্থিতিতে মিসর প্রস্তাব দেয়, কয়েক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি হবে এবং এই সময়ে হামাস আট জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেবে; অপরদিকে ইসরায়েল কয়েকশ’ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী মিসরের এই প্রস্তাবেও রাজি হচ্ছিলেন না। তবে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক হওয়ার পর নেতানিয়াহু নমনীয় হন বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েল মিসরের কাছে তাদের পাল্টা প্রস্তাব পাঠায়। এতে ইসরায়েল জীবিত বন্দির সংখ্যা ১১ থেকে কমিয়ে এনেছে। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যে জীবিত বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। যদিও হামাস বলেছে, বন্দিদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেয়া হবে। ১৬ বন্দির লাশ ফেরতেরও দাবি জানিয়েছে ইসরায়েল। তাছাড়া ইসরায়েল বন্দিদের মুক্তির বদলে এবার কম ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে বলে নিজেদের প্রস্তাবে জানিয়েছে। এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল একজন বন্দির বিনিময়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন ফিলিস্তিনিকেই মুক্তি দিতে চায়। ইসরায়েল আরও জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হলে গাজা থেকে তারা অবরোধ তুলে নেবেন এবং সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেবেন। তাছাড়া গত ১৮ মার্চের আগে তাদের সেনারা গাজার যে স্থানে ছিলেন, তাদের সেখানে সরিয়ে নেয়া হবে। অর্থাৎ গাজার মধ্যবর্তী স্থানগুলো থেকে দখলদার সেনারা সরে যাবেন। অস্থায়ী এই যুদ্ধবিরতি শুরু হলে হামাসের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করা হবে বলেও প্রস্তাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরায়েল। হামাস প্রথম থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চেয়ে আসছে। এর আগে জানুয়ারিতে যে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, সেটিতে বলা ছিল, প্রথম ধাপ চলার সময় ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা করবে। কিন্তু ওই সময় তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং আলোচনা না করে উল্টো রমজান মাস চলাকালীন গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। যেহেতু ওই সময় বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তাই এখন ইসরায়েলের লিখিত বা মৌখিক প্রতিশ্রুতিকে পর্যাপ্ত মনে করছে না হামাস। হামাসের এ বিষয়টি নিয়ে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, প্রয়োজনে ট্রাম্প প্রকাশ্যে ঘোষণা দেবেন, ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করবে। গত শনিবার রাতে হামাসের কর্মকর্তা খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কায়রো গেছেন এবং সেখানে মিসরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে নতুন ইসরায়েলি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবেন তারা।

যুদ্ধ বন্ধ হলেই কেবল বন্দি মুক্তি : এদিকে, দীর্ঘদিনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে হামাস গত শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় শত্রুতা বন্ধের শর্তেই কেবল ইসরায়েলি বন্দিরা মুক্তি পাবেন; অন্যথা নয়। সংগঠনটি বলেছে, ‘সমীকরণ স্পষ্ট। শত্রুতা বন্ধের বিনিময়ে বন্দিদের মুক্তি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এই শর্ত প্রত্যাখ্যান করলেও বিশ্বের কাছে এটিই গ্রহণযোগ্য শর্ত। হামাস বলেছে, নেতানিয়াহু এই শর্তে সহজে রাজি না হওয়ার কারণ, তিনি সংঘাত বাড়াতে চান এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত করতে চান। এর মাধ্যমে ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করতে চান তিনি।

মুক্তির আকুতি জানিয়ে ইসরায়েলি বন্দির ভিডিও : গাজা উপত্যকায় প্রায় দেড় বছর ধরে আটক ইসরায়েলি-আমেরিকান নাগরিক ইডান আলেক্সান্ডারের একটি ভিডিও গত শনিবার প্রকাশ করেছে হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বাধীন অভিযানের সময় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা তাকে আটক করেন। তারিখবিহীন এই ভিডিওতে ইডান আলেক্সান্ডার জানান, তিনি গাজায় ৫৫১ দিন ধরে আটক রয়েছেন। ভিডিওতে তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘আমি এখনও কেন বন্দি?’ পাশাপাশি তিনি মুক্তির ব্যবস্থা করতে ইসরায়েলি সরকারের প্রতি আকুতি জানান। এই ভিডিওটি এমন এক সময় প্রকাশিত হলো, যখন ইহুদিরা স্বাধীনতা উদ?যাপনের সপ্তাহব্যাপী উৎসব ‘পাসওভার’ পালন শুরু করেছেন। তবে ইডানের পরিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় ইডান এবং আরও ৫৮ জন বন্দি থাকা অবস্থায় এই উৎসব তাদের জন্য স্বাধীনতার কোনো বার্তা বহন করছে না। তিনি বন্দি মুক্তিতে আন্তরিক পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য সরকারকে অভিযুক্ত করেন। চলমান যুদ্ধের সময় হামাস এর আগেও একাধিকবার বন্দিদের ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে তাদের মুক্তির জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সরকারকে অনুরোধ করতে দেখা গেছে। বন্দিরা হামাসের সঙ্গে চুক্তি করে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে তাদের মুক্তি নিশ্চিত করতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এসব ভিডিওকে ‘প্রচার কৌশল’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন, যা সরকারকে চাপে ফেলতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তৈরি করা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। এই যুদ্ধ বর্তমানে ১৮তম মাসে প্রবেশ করেছে। ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া একটি যুদ্ধবিরতির সময় হামাস ৩৮ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়। তবে ইসরায়েল ফের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় স্থল ও বিমান অভিযানে ফিরে যায়। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বাকি ৫৯ জন বন্দিকে মুক্ত করা না হবে এবং গাজা পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণ না হবে, ততক্ষণ এই অভিযান চলবে। অন্যদিকে, হামাস বলেছে, তারা কেবল যুদ্ধ সমাপ্তির শর্তে বন্দিদের মুক্তি দেবেন। অস্ত্র সমর্পণের দাবি প্রত্যাখ্যান করে তারা বলেছেন, গাজাকে দখলদারমুক্ত রাখতে সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামই একমাত্র পথ এবং তারা এই পথ থেকে কখনও বিচ্যুত হবেন না।

‘মোরাগ’ করিডোর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে : আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার খান ইউনিস ও রাফার মধ্যবর্তী অঞ্চলের ‘মোরাগ’ করিডোর পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েল। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটিকে গাজার বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। ইসরায়েলের বাহিনী বলেছে, রাফাকে এখন চারিদিকে ঘিরে ফেলেছে তাদের বাহিনী। ৩৬তম ডিভিশন ‘মোরাগ’ করিডোর এবং গাজা ডিভিশন মিসর-গাজা সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডোরে কাজ করছে বলেও জানায় আইডিএফ। আগে থেকেই ফিলাডেলফি করিডোর দখল করে রেখেছিল ইসরায়েল। এরপর খান ইউনিসের কাছে ইসরায়েল মোরাগ করিডোর তৈরি করে। এই করিডোরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার মাধ্যমে রাফাহ খান ইউনিস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে পুরো রাফা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত