ছয় দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারা দেশে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে এ ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান, ঢাকা পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তবে বৈঠকে আমরা একমত হতে পারিনি। তারা লিখিতভাবে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেননি। তাই আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
জুবায়ের পাটোয়ারী বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের যদি সাধারণ একজন প্রিন্সিপালকে বদলি করতে সারা দিন লেগে যায়, সেই সরকার কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করবে? দেশের উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার্থীদের ভূমিকা কীভাবে তবে রাখবে?
তিনি বলেন, আমরা সরকারকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করছি। এরমধ্য দিয়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলো।
জুবায়ের পাটোয়ারী আরও বলেন, দেশের সংস্কারে, জাতির সংস্কারে শিক্ষার্থীদের ভূমিকার কথা যদি আপনারা অস্বীকার করেন, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন তাহলে দেশের উন্নয়ন কখনওই সম্ভব না।
এসময় তিনি সড়ক বুধবারের অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেন এবং যানচলাচল স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানান।
আরেক আন্দোলনকারী মাশফি রহমান বলেন, জনভোগান্তি বিবেচনায় কর্মসূচি আজকের মতো প্রত্যাহার। বৃহস্পতিবার রেলপথ অবরোধ কখন শুরু হবে, তা আমাদের কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে জানিয়ে দেয়া হবে।
এর আগে বুধবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা ছয় দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা সড়ক অবরোধ করে দিনব্যাপী বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে অংশ নেন মহিলা পলিটেকনিকের ছাত্রীরাও। শিক্ষার্থীদের অবরোধে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সড়কে চলাচলকারী মানুষ পড়েন সীমাহীন দুর্ভোগে। বুধবার প্রায় পৌনে ৯ ঘণ্টা পর অবশেষে তেজগাঁও-মগবাজার সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। তবে এ দীর্ঘ সময়ে তৈরি হয়েছে যানজট ও যানবাহনের বাড়তি চাপ।
এদিকে ছয় দফা দাবিতে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। এছাড়া রাজশাহীতে রেলপথ অবরোধ করায় ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।
রাজশাহী: রাজশাহীর তিনটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আজ দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন। দুপুর ১২টার দিকে নগরের ভদ্রা মোড় এলাকায় তারা অবস্থান নেন। এতে ওই মোড়ের তিন দিকের সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া রেললাইন অবরোধের কারণে রাজশাহী থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলে সড়ক ও রেলপথে চলাচল শুরু হয়।
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী পলিটেকনিক, মহিলা পলিটেকনিক ও সার্ভে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমায়েত হন। পরে তারা নগরের রেলগেট এলাকায় আসেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে তারা নগরের ভদ্রা মোড় এলাকায় তিন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড় অবরোধ করেন। এসময় তারা পাশে থাকা রেলপথেও অবস্থান নেন।
গত মঙ্গলবার রাজশাহী পলিটেকনিক, মহিলা পলিটেকনিক ও সার্ভে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে নগরের রেলগেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। পরে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সড়ক ও রেলপথ ছেড়ে দেন তারা।
সিলেট: সিলেটে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চণ্ডীপুল এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে বেলা একটার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান। পরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বের হন। পরে সিলেটের চণ্ডীপুল এলাকায় জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের কর্মকর্তারা সড়ক থেকে সরে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তবে বেলা একটার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে যান।
ময়মনসিংহ: একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় মাসকান্দা এলাকায় ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দীঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় গিয়ে দুপুর সোয়া ১২টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।
পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কর্মকর্তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। এর আগে শিক্ষার্থীরা ‘যাদের হাতে স্ক্রু ড্রাইভার, তাদের হাতে চক-ডাস্টার মানায় না’, ‘মামা থেকে মাস্টার, মামা বাড়ির আবদার’, ‘১১৩-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘আসো মামা খেলা হবে’, ‘ক্রাফট মামা হঠাও, পলিটেকনিক শিক্ষা বাঁচাও’, ‘তুমি কে, আমি কে, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার’, ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রুমডো ও মোমেনশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দীঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় একত্র হয়ে বিক্ষোভ করেন।
বগুড়া: বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শহরের বনানী এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বসে পড়েন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এতে মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের ছয় দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়িত না হলে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে এবং সারা দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে বৃহত্তর কর্মসূচি নেয়া হবে।
এর আগে একই দাবিতে গত মঙ্গলবার বগুড়া সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা শহরের সাতমাথায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
নওগাঁ: বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নওগাঁ-বগুড়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় নওগাঁ-বগুড়া রুটসহ শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নওগাঁ-বগুড়া রুটে চলাচল করে দূরপাল্লার কোচ এবং আন্তঃজেলা রুটে চলাচল করা বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকে পড়ে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
নওগাঁ পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী মোত্তাকিনুল আলম বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি দিয়ে সম্প্রতি হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। এই রায় তারা বাতিল চান। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ২০২১ সালে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।
কুমিল্লা: বুধবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কোটবাড়ী নন্দনপুর এলাকায় এসে মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত অবরোধ চলে। প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয়মুখী লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্তত আট কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা। তীব্র গরমের মধ্যে শিশু ও নারীরা বেশি কষ্ট পেয়েছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকায় অবস্থিত কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কের কোটবাড়ী নন্দনপুর এলাকায় এসে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে বসে পড়েন। অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্লোগান দেন। কর্মসূচিতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে বসে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে না সরে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এসময় সেনা সদস্যরা বেশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এতে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান এবং হুড়াহুড়ি করতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন।
কুষ্টিয়া: বেলা ১১টা ২৫ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত কুষ্টিয়ার শহরের মজমপুরে ট্রাফিক মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে চলে যান। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, শতাধিক শিক্ষার্থী পলিটেকনিক থেকে বের হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁরা শহর প্রদক্ষিণ শেষে মজমপুরে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
দুপুর ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, চতুর্দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। ট্রাফিক মোড়ে দাঁড়িয়ে মাইকে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দুতিনটি দল মহাসড়কে ফুটবল খেলছে। কেউ কেউ বাসের ছাদে উঠে পতাকা উড়াচ্ছেন। কারও হাতে ব্যানার আবার কারও হাতে প্ল্যাকার্ড। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বলে জানান।
অবরোধের সময় পলিটেকনিকের কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে আসেন। তারা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং মহাসড়ক ছেড়ে দিতে বলে জেলা প্রশাসকের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সাড়া দেননি। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা রেললাইনের ওপর বাঁশ ও খড়কুটার স্তূপ করেন। সেখানে ট্রেনের একটা ট্রলি যাওয়ার সময় আটকে পড়ে।
খুলনা: সকাল সোয়া ৯টার দিকে খুলনা রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে আসা খুলনা-চিলাহাটি রুটের রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন নগরের বয়রা জংশন এলাকায় আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। এ কারণে খুলনা স্টেশন থেকে খুলনা-ঢাকা পথের চিত্রা, খুলনা-পার্বতীপুর পথের রকেট, খুলনা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ পথের মহানন্দা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনার সঙ্গে সারা দেশে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
পটুয়াখালী: পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা আজ বেলা ১১টার দিকে শহরের বড় চৌরাস্তায় অবস্থান নেন। এতে কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে এর আগে তারা স্মারকলিপি দেয়াসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন, কিন্তু কোনো সাড়া না পাওয়ায় এবার তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে বাধ্য হয়েছেন। দাবি আদায় না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (মহানন্দা সেতু) এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ ঘটনায় সেতুর দুই পাড়ে আটকা পড়ে অনেক যানবাহন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বেলা একটার দিকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল: বরিশালের বিভিন্ন পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আজ দুপুর ১২টার দিকে নগরের নথুল্লাবাদে জড়ো হন। তারা নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে বরিশাল-ঢাকা, বরিশাল-খুলনা, বরিশাল-কুয়াকাটাসহ দূরপাল্লা ও অন্যান্য পথের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অসংখ্য যানবাহন আটকে পড়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। এতে শহরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
দিনাজপুর: দিনাজপুর শহরের ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আজ সকাল সাড়ে ৯টায় রেললাইন অবরোধ করেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে বাঁশ ফেলে অবরোধ শুরু করেন। রেলপথ অবরোধ করায় পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী তিনটি ট্রেন আটকা পড়ে কয়েক হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন। পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করায় শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হতে থাকে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা ছয় দফাসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার-ফেস্টুন হাতে সড়কে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় মাইকে শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। বেলা ১১টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সড়ক ছেড়ে আন্দোলন করার কথা বললেও শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়েনি।