ঢাকা ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পিকে হালদারসহ পলাতকদের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা

পিকে হালদারসহ পলাতকদের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা

প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারসহ যে কোনো দ-িত ও পলাতক আসামির বক্তব্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার-সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন

হাইকোর্ট। পরবর্তী আদেশ অথবা পিকে হালদার সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ আদেশ দেয়।

গত সোমবার রাত ১০টার খবরে পালাতক পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচারের পর এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তাকে সরাসরি সংযুক্ত করে একাত্তর টিভি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি নজরে এনে লিখিত আবেদন করলে গতকাল বুধবার কোর্ট বেঞ্চ নিষেধাজ্ঞা জারির ওই আদেশ দেয়। একাত্তর টিভির খবরে পিকে হালদারের প্রচারিত বক্তব্য এবং ‘টকশোর’ ভিডিও ক্লিপও তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে তা হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডেরও (আইএলএফএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।

আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতে পিকে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ৩০০ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে। বিদেশে থাকা পিকে হালদার গত ২৮ জুন আইএলএফএসএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে তার দেশে ফেরার জন্য ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন।

আদালত তাতে অনুমতি দিলেও পিকে হালদার না ফেরায় ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ঢাকার জজ আদালত এরই মধ্যে পিকে হালদারের সব স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করারও আদেশ দিয়েছেন।

গত সোমবার রাতে একাত্তর টিভিতে পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচার ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তার যুক্ত হওয়ার বিষয়টি গত মঙ্গলবার আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। তিনি আদালতে বলেন, “গত সোমবার রাত ১০টায় একাত্তর টিভিতে পলাতক পিকে হালদারের সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছে। এরপর আবার টকশোতেও ওই আসামিকে লাইভে এনেছে। আমাকেও সংযুক্ত করেছিল। আমি তার (পিকে হালদার) কথা শুনে লাইভ থেকে বেরিয়ে আসি।

আমি তো কোনো পলাতক আসামির সঙ্গে টক-শো করতে পারি না। প্রথম কথা হল, পিকে হালদার পলাতক। দ্বিতীয় কথা হলো তার বিষয়ে এই আদালতে একটা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা বিচারাধীন।

“তাই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন পি কে হালদারের প্রচারিত সাক্ষাৎকারে কী আছে। এই আদালত সেই ভিডিও, সাক্ষাৎকার তলব করে দেখতে পারে। এরপর প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারেন।” দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আদালত লিখিত আবেদন করতে বললে গতকাল বুধবার সেই আবেদন জমা দেয় দুদক।

আবেদনে সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যে কোনো প্রচার মাধ্যমে পলাতক পিকে হালদারের বক্তব্য প্রচার, পুনঃপ্রচার ও সম্প্রচার বন্ধে তথ্য সচিব ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।

সেই সঙ্গে পিকে হালদারসহ যে কোনো পলাতক আসামির বক্তব্য প্রচার, বিতরণ ও সম্প্রচার বন্ধেরও নির্দেশনা চায় দুদক। এ আবেদনের শুনানির পরই আদেশ দেয় হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত