ঢাকা ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জানুয়ারির মধ্যেই ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

জানুয়ারির মধ্যেই ভ্যাকসিন পাওয়ার  আশা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা আসবে বলে আশা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য এ টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়ার দিনই এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন,

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন আনতে গত ৫ নভেম্বর সরকার চুক্তি করেছিল। বুধবার যুক্তরাজ্য সরকার সেই অক্সফোর্র্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদন দিয়েছে। এটি অবশ্যই আমাদের জন্য সুখবর। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন হওয়া মাত্রই সেটি ভারতের পাশাপাশি আমরাও পেয়ে যাব। এরপর আগামী জুন মাসের মধ্যেই গ্যাভী ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক আরও ৫ থেকে ৬ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেশে চলে আসবে। ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশ না নেওয়ায় ১৮ বছরের নিচে দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষকে ও গর্ভবতী প্রায় ৩৫ লাখ মায়েদের ভ্যাকসিন দেওয়া না লাগলে ৫ থেকে ৬ কোটি ভ্যাকসিন প্রয়োগেই দেশ অনেকটা নিরাপদ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার সকালে মহাখালীর বিসিপিএস অডিটরিয়াম হলে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত ডাটা মিডিয়া ব্লুমবার্গ কর্তৃক বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী ২০তম ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম স্থানের স্বীকৃতি উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

ব্লুমবার্গের স্বীকৃতিকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ব্লুমবার্গ শুধু দেশের অর্থনৈতিক সফলতা দেখেই রিপোর্টটি করেনি। প্রতিষ্ঠানটি করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় জনবল, অবকাঠামো, টিকাদান সক্ষমতা, চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১০ মেট্রিক্স বিবেচনা করে এ ফল ঘোষণা করেছে। কাজেই এ ফল আমাদের জন্য এক বিরাট অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ ফলে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে আরও গতিশীলভাবে কাজে নেমে পড়তে হবে বলে উপস্থিত চিকিৎসকদের জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণেই এ মহামারি মোকাবিলায় সফল দেশগুলোর তালিকায় ২০তম স্থানে বাংলাদেশকে রেখেছে ব্লুমবার্গ।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে শীতে করোনাভাইরাসের ঢেউ সামালে বিশ্বজুড়ে দেশগুলো যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তার আলোকে র‌্যাংকিং করেছে ব্লুগবার্গ। সেখানে প্রথম স্থানে রয়েছে নিউ জিল্যান্ড, এরপরে রয়েছে তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে ও সিঙ্গাপুর। বাংলাদেশের পরে স্থান হয়েছে জার্মানির, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৩৭তম, তাদের দুই ধাপ পরে আছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তালিকায় পাকিস্তানের অবস্থান যুক্তরাজ্যের এক ধাপ উপরে ২৯তম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশ লকডাউনে চলে গেছে। সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো লকডাউন ছিল না। কারও কোনো ছুটি ছিল না।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যে পরিশ্রম করেছে তার ফল ব্লুমবার্গের এ গবেষণা জরিপ। দেশে অনেকেই সমালোচনা করেছে। তবে বিশ্ব বাংলাদেশের অর্জনের ঠিকই স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্ব গণমাধ্যমে এসব অর্জনের কথা বলা হয়। ব্লুমবার্গের এ তথ্য তারই প্রমাণ। আমাদের যে পরিশ্রম করেছি তার স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এটা সরকারের পরিশ্রমের ফল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত