গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করল আওয়ামী লীগ

গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার প্রত্যয়

প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপন করেছে আওয়ামী লীগ। দিনটি উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি, সমাবেশ ও আলোচনা সভাসহ দিনভর নানা কর্মসূচি পালন করেছে ক্ষমতাসীন দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো। কর্মসূচি থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের ‘উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা’ অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আলোচনা সভা আয়োজন করে। আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত

হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র উন্নয়নের ইতিহাসে একটি বিজয়ের মাইলফলক। জনগণের পবিত্র ইচ্ছার প্রতিফলন সংবিধান রক্ষার দিন। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তি দুর্নীতি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের আস্ফালন, আর সহিংস রাজনীতির কালো ছায়া কটিয়ে গণতন্ত্রের নবতর অভিযাত্রায় অগ্রসর হয় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।

সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আজ যারা গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করে, ওরা কারা? তারা হলেনÑ ‘১০টি হোন্ডা, ২০টি গু-া-নির্বাচন ঠান্ডা’Ñ এ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল। ওরা গণতন্ত্র বোঝে না, তাদের গণতন্ত্র হলো হাওয়া ভবন সৃষ্টি। তাদের গণতন্ত্র হলো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করা। তাদের গণতন্ত্র হলো দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, বিএনপি বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছিল। তারা দেশে ধর্মভিক্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি হিসেবে যারা দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করতে চায়, তাদের মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না।

এদিকে বিকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিকালে বঙ্গবন্ধু ২৩ অ্যাভিনিউস্থ দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান, আগামী নির্বাচনের আগেই পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করা যাবে। এ কথা জানতে পেরে দেশের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র শুরু করেছে স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি।

মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, আজ বিএনপি গণতন্ত্রের হত্যা দিবস পালন করেছে। কারণ তারা নিজেরাই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তাদের আচার-আচরণ গণতন্ত্রবিরোধী। শেখ হাসিনা বেঁচে থাকতে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না। জনগণের ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বিএনপির মতো বন্দুকের নলদ্বারা ক্ষমতা দখল করেননি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, তালাবিহীন ঝুড়ি থেকে বিশ্বের রোলমডেল বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন নতুন করে যড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যার নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে সেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা শুরু করছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রধান ইস্যু নয়, তাদের উদ্দেশ্য হলো সরকার পতন করা। যড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনা বেঁচে থাকতে এদেশে কোনো অপশক্তি ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি আর কোনো দিন এ দেশের যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্র ছিল নির্বাচনকে বানচাল করা। এজন্য তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, এ নিয়ে খোলাসা করে শুরু থেকেই কিছু বলেনি। পরে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। উদ্দেশ্যে ছিল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং হাঙ্গামা বাঁধিয়ে নির্বাচনকে ভ-ুল করা। কিন্তু করতে ব্যর্থ হয়েছিল। সেজন্য তারা দিবসটিকে ভিন্নভাবে পালন করছে। প্রকৃতপক্ষে তারা সেদিন গণতন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে চেয়েছিল। সেজন্যই তারা আজ ভিন্ন নাম দিয়ে দিবসটি পালন করছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, সদস্য আবদুল আউয়াল শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নুরুল আমিন রুহুল, শহীদ সেরনিয়াবাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামাল, মহিউদ্দিন মহি, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, সদস্য অপু বড়–য়া প্রমুখ।