নীলফামারীতে ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এখন কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি তারা। তবে, বাজারের দামের উপর নির্ভর করবে তাদের ভাগ্য। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ২৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।
তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ২৬ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সদরে ২ হাজার ৮২০, সৈয়দপুরে ৪৬০, ডোমারে ৩ হাজার ৩০০, ডিমলায় ১৪ হাজার ২৫০, কিশোরগঞ্জে ৩ হাজার ২১৫ এবং জলঢাকা উপজেলায় ২ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ১০০ মেট্রিক টন।
সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালীপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলী বলেন, চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে পাইওনিয়ার- ৫৪ ও ৯৫ জাতের ভুট্টা চাষ করেছি। এতে বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ মণ। তিন বিঘায় ফলন হয়েছে ৯৬ মণ। যার বাজার মূল্য ৫৯ হাজার ৫২০ টাকা। খরচ হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা।
এতে আমার লাভ হবে ২৩ হাজার ৫০০ টাকা। জেলা শহরের নিউ বাবুপাড়ার ইসমাইল হোসেন বালু বলেন, এবার প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে এক বিঘা জমিতে প্যাসিফিক জাতের ভুট্টা লাগিয়েছি। বিঘায় ফলন হয়েছে ৩০ মণ। আর এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করতে খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। মণ প্রতি ৬২০ টাকা দরে বিক্রি করেছি ১৮ হাজার ৬০০ টাকায়। এতে আমার লাভ হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ টাকা।
কৃষক একরামুল হক বলেন, এবার দুই বিঘা জমি চুক্তি নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে আরও বেশি ফলন হতো। এবার ভুট্টা চাষে লাভবান হলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করব। সদরের কুচকাটা ইউনিয়নের দোনদরী গ্রামের সালেহ উদ্দিন বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কাঁচা ভুট্টার বাজারে দাম কিছুটা কম। এখন বিক্রি না করে শুকিয়ে ঘরে রেখে দিতে পারলে আরও বেশি লাভ করতে পারতাম।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮৫ ভাগ ভুট্টা মাড়াই করে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনে মধ্যে বাকি ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ শেষ হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। এবার ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ২৬ হাজার ৬৫৫ হেক্টর। আশা করছি, ভুট্টা বিক্রি করে লাভবান হবেন কৃষকরা।