ঢাকা ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হারিয়ে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

হারিয়ে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

এক সময় শিশুদের খেলাধুলার প্রধান উপকরণ ছিল মাটির তৈরি পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল ও হাতি-ঘোড়া। পুতুলের সঙ্গে পুতুলের বিয়ে দেওয়া আর হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে চড়ুইভাতি খেলায় সারাক্ষণ আনন্দে মেতে থাকত শিশুরা। শিশুদের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুঘর গ্রামের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা তৈরি করত হরেক রকমের খেলনা। সবচেয়ে বেশি খেলনা বিক্রি হতো বিভিন্ন মেলায়। আর তাই মেলার জন্য ব্যস্ত থাকতেন মৃৎশিল্পীরা।

বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা পালপাড়ায় আসতেন মেলার জন্য পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল ও হাতি-ঘোড়াসহ নানা ধরনের মাটির তৈরি খেলনা এবং জিনিসপত্র বানানোর অর্ডার নিয়ে। রাত-দিন কাজ করে পাইকারদের অর্ডার ডেলিভারি দিতেন মৃৎশিল্পীরা। তবে কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি খেলনা সামগ্রীগুলো। বিলীন হতে বসেছে ব্রাহ্মণাবড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। পালপাড়ায় পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। এখানকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের। তাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস এই মৃৎশিল্প। তবে এখন অনেকেই এই পেশা ছেড়ে ভিন্ন পেশায় মনোযোগী হয়েছেন।

বছর পাঁচেক আগেও পালপাড়ার ৪০-৫০টি পরিবার মৃৎশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু দিন দিন প্লাস্টিকের তৈজসপত্রের কারণে মাটির জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে মৃৎশিল্পের কাজ ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে। প্লাস্টিকের পণ্য বাজারে আসার পর থেকেই পালপাড়ার দুঃখ যেন আরও বেড়েছে। এখন শুধু ৮-১০টি পরিবার এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। তবে তাদের কেউই শিশুদের জন্য খেলনাসামগ্রী তৈরি করেন না।

পালপাড়ার বাসিন্দা পিংকি রানি বলেন, আগে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের অনেক চাহিদা ছিল। আমরা রাতদিন কাজ করে পাইকারদের অর্ডার ডেলিভারি করেছি। পুতুল, হাতি-ঘোড়া আরও কত কী বানিয়েছি। এখন আর সেই দিন নেই। মাটির জিনিস ভেঙে যাবে- সেই অজুহাতে কেউ নিতে চায় না। দইয়ের পাতিল-গ্লাস বানিয়ে কোনো রকমে টিকে আছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত