মহাসড়ক নয়, যেন ধান শুকানোর চাতাল!
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুর-মাদারগঞ্জ মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার অংশে চলছে ধানমাড়াইয়ের কাজ। শুকানো হচ্ছে খড় ও ধান। এতে সড়কের অর্ধেক অংশ যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। যার ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে বলে অভিযোগ চালকদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামালপুর-মাদারগঞ্জ মহাসড়ক একটি ব্যস্ততম সড়ক। মাদারগঞ্জ উপজেলা ও মেলান্দহ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ পাঁচটি ইউনিয়নের লোকজন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে।
মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী বাজার থেকে হাজরাবাড়ী বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের ওপর বোরো ধান মাড়াই, খড় ও ধান শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন কৃষকরা। এতে মহসড়কের অর্ধেক অংশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী বাজার থেকে হাজরাবাড়ী বাজার পর্যন্ত সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কে ওপর ধান ও খড় শুকাচ্ছেন স্থানীয়রা। কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে খড় উল্টিয়ে দিচ্ছেন। এর পাশ দিয়ে ছুটে চলছে দ্রুত গতির যানবাহন। ধান ও খড় শুকানোয় সড়কের অর্ধেকের বেশি অংশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। সেই অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন।
মাদারগঞ্জের ট্রাকচালক নাজমুল বলেন, সড়কের অর্ধেক অংশজুড়ে কৃষকরা খড় ও ধান শুকাচ্ছেন। ধান নেড়ে দেওয়ার সময় অনেকে গাড়ির সামনে এসে যান। খড় উল্টানোর সময় বারবার হর্ন দিলেও শুনতে চান না। যদি এমন সময় দুর্ঘটনা হয়, তাহলে সবাই তো দোষ দেবে ট্রাকচালকের। এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হাজরাবাড়ী পৌরসভা এলাকায় ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম হানিফ বলেন, এই সড়কে অটোরিকশা সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে চলে। খড়ের ওপর মোটরসাইকেল ব্রেক করলেই পিছলে দুর্ঘটনা ঘটে। অটোরিকশা চালক মনির হোসেন বলেন, ধান আর খড়ে অর্ধেক জায়গা নিয়ে নিয়েছে। আর অর্ধেক জায়গা দিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এ সড়কে ৫০ গতিতে অটোরিকশা চলে। মহাসড়কে যদি এ ধরনের ধান শুকানোর কাজ করা হয়, তাহলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটবে।
গত সপ্তাহে ভাবকী বাজারের আগে সড়কে খড়ের জন্য এক মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ঘটেছে। কোনামালঞ্চ এলাকায় আব্দুল্লাহ নামের কৃষক বলেন, ‘সড়কে খড় ও ধান তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। সড়কে দিলে আমগরে আলা কষ্টও কম হয়। বাড়িত পাকা জায়গা নাই। ওই জন্যে সড়কে দেই। সড়কে এক রোদেই শুকায়ে যায় তাই সবাই এখানে ধান রোদে দেই।’
মেলান্দহ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, যারা মহাসড়কে ধান ও খড় দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কে ধান শুকানো ঠিক নয়। শিগগির এসব বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, দ্রুত কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।