রাঙামাটিতে মধুমাসে ফলের সমারোহ

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাঙামাটি প্রতিনিধি

ঋতু পরিক্রমায় আবারও এসেছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। জ্যৈষ্ঠ মাস মানেই মৌসুমি ফলের আগমন। সমতলের অনেক জেলার মতোই রাঙামাটির পাহাড়ি অঞ্চলে চাষ হয়- আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, জামসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের। ফলে সেসব মৌসুমি ফলের সুগন্ধে ভরে উঠেছে স্থানীয় বাজারগুলো। রাঙামাটির বনরুপা, কলেজগেট ও রিজার্ভ বাজারের মতো বড় বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মৌসুমি ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। বাজারে আনারসের আধিক্য বেশি দেখা গেলেও বাদ যায়নি আম, কাঁঠাল, লিচু, জামসহ অন্যান্য ফলও। রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলা থেকে নিজেদের বাগানে উৎপাদিত ফল নিয়ে রাঙ্গামাটি সদরে বিক্রির উদ্দেশে এসেছেন অনেক কৃষক এবং ছোট বাগান মালিকরা। অন্যান্য ফলের দাম নিয়ে বিক্রেতাদের সন্তুষ্ট থাকতে দেখা গেলেও আনারস নিয়ে বিক্রেতাদের মধ্যে দেখা গেছে অসন্তুষ্টি।

আনারস বিক্রেতা উজ্জ্বল চাকমা বলেন, আমরা আনারসের যে দাম পাচ্ছি, তাতে আমাদের পোষায় না। বাগানে আনারস লাগানো থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত আনতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু পরিশ্রম অনুযায়ী আমরা দাম পাচ্ছি না।

আরেক বিক্রেতা সাধন চাকমা বলেন, আমরা এখন প্রতি জোড়া ছোট আনারস ৩০ টাকা করে বিক্রি করছি। এর চেয়ে একটু বড়গুলো জোড়া ৪০, আরেকটু বড়গুলো ৬০ টাকা জোড়া বিক্রি করছি। বৃষ্টি পড়লে আনারস একটু কম বিক্রি হয়। যেগুলো বিক্রি হয় না, সেগুলো পেকে গেলে আমাদের ফেলে দেয়া ছাড়া কিছুই করার থাকে না। এতে আমাদের ক্ষতিই হচ্ছে।

অন্যদিকে কাঁঠাল বিক্রেতা সুখিময় চাকমা বলেন, আমি নিজের গাছের কাঁঠাল নিয়ে এসেছি। কাঁঠাল বিক্রি করে মোটামুটি ভালোই দাম পাচ্ছি। এই দামে আমি সন্তুষ্ট। এদিকে রাঙামাটিতে আমের বাজার এখনো তেমন জমে ওঠেনি। স্থানীয়ভাবে আম্রপালি এবং রাংগুয়াই জাতের আমই বেশি চাষ হয় এখানে। তবে এখনও সেভাবে আম বাজারে উঠতে শুরু করেনি। বিক্রেতারা জানালেন, জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে স্থানীয় আম্রপালি বাজারে উঠতে শুরু করবে। আম বিক্রেতা মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, আপাতত স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়া দেশি আম, মল্লিকা, ল্যাংড়া এসব জাতের আম বাজারে এসেছে। অন্যান্য আম এখনও আসা শুরু হয়নি। তবে গাড়ি ভাড়া বেশি হওয়ায় আমের দামও একটু বেশি। তাছাড়া বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও কম বলে জানান তিনি।

ঢাকা থেকে আসা মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী আব্দুল সোবাহান বলেন, আমরা অনেক ব্যবসায়ীই ফল কেনার জন্য প্রতিবছর রাঙামাটিতে আসি। আমাদের সঙ্গে অনেক কৃষক এবং বাগান মালিকের চুক্তি করা থাকে। তাদের থেকে ন্যায্য দামে পণ্য ক্রয় করে আমরা এসব ফল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দিই। রাঙামাটির আনারসের কদর সব জেলাতেই আছে। রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর রাঙামাটির ১০টি উপজেলা মিলে ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে সম্ভাব্য ফলন ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। তবে এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে ফলন কিছুটা কম হয়েছে।