প্রাণ হারাচ্ছে পটুয়াখালীর মাঝগ্রাম খাল

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  পটুয়াখালী প্রতিনিধি

অপরিকল্পিত স্থায়ী বাঁধ ও সম্মিলিত নজরদারি না থাকায় প্রাণ হারিয়েছে পটুয়াখালী মাঝগ্রাম খাল। খনন ও স্লুইসগেট না থাকায় অস্তিত্ব বিলীনের পথে খালটির অধিকাংশ জায়গায় এখন প্রভাবশালীদের দখলে। খাল দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে পাকা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি। সরকারি মাপ অনুযায়ী খনন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রায় ৪০ বছর আগে পটুয়াখালী চৌরাস্তা থেকে মির্জাগঞ্জ সড়কের চৌরাস্তা মসজিদের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মাঝগ্রাম খালে কোনো স্লুইসগেট বা কালভার্ট না করেই অপরিকল্পিত স্থায়ী বাঁধ দেয় সড়ক বিভাগ। যত্রতত্র বাঁধের জন্য প্রাণহীন হয়ে পরেছে পটুয়াখালী শহরের মাঝগ্রাম খালটি। আর তাতেই মরা খালে পরিণত হওয়ায় দখল করে নেয় প্রভাবশালীরা।

এদিকে খালের জায়গা ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে পাকা, আধাপাকা বাড়ি ও সীমানাপ্রাচীর। খালের মধ্যে বাঁধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে চলাচলের রাস্তা ও ব্যক্তিগত পুকুর। ৪০ ফিটের খালটি কোথাও কোথাও ৫ ফিটে পরিণত হয়েছে। সড়ক বিভাগের বাঁধের জন্য খালের দক্ষিণ দিকের বহমান অংশটিতে পানি না থাকায় সেখানকার কৃষকদেরও কোনো উপকারে আসছে না। অথচ এই খাল এলাকার কৃষি ও মাছ উৎপাদনে একসময় অবদান রেখেছে। স্থানীয়রা জানান, ১৯৮৩/৮৪ সালে মির্জাগঞ্জ সড়ক উন্নয়নের সময় চৌরাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে যাওয়ার সময় এখানে একটি বাঁধ দেয়া হয়েছে। এরপর খালের পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, অথচ আর এই খাল আজও খনন করা হয়নি। এখন ময়লা-আবর্জনা ও নোংরা ময়লায় সয়লাব। এখানে জন্ম নেয়া মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ এলকাবাসী।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন জানান, খালটির অবস্থান পৌরসভার মধ্যে হওয়ায় এর দায়দায়িত্ব পৌরসভার। তবে জেলা পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব থাকায় তিনি এ বিষয়ে কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন। পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১ বছর আগে সড়ক বিভাগে বাঁধ উন্মুক্ত করার আবেদন করা হয়েছে।

খালগুলো কেটে পরিকল্পিতভাবে ব্রিজ, কালভার্ট বা স্লুইস গেট করা হলে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নৌপথ চালু করা সম্ভব হবে। কেউ দখল করলে, দখলমুক্ত করার জন্য সবকিছু করা হবে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএম আতিক উল্লাহ খালটি পুনরুদ্ধারে সড়ক বিভাগে প্রস্তাবনা দিলে বাঁধ কেটে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে বলে জানান। তিনি আরও বলেন, শুধু মাঝগ্রাম খাল নয়, জেলার সব খাল পুনরুদ্ধার ও দখলমুক্ত করে আগের মতো প্রাণ ফিরে পাবে- এমনটাই প্রত্যাশা করেছে পটুয়াখালীবাসী।