জামালপুর শহরবাসীর মধ্যে এখন কুকুর আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাস্তায় বের হলেই কুকুরের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। গত ৩ দিনে কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন প্রায় ৭০ জন। কুকুরের কামড়ে আহতরা ভ্যাকসিন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার নিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন। কিন্তু আক্রান্তদের অভিযোগ, জেলা হাসপাতালে গিয়ে রেবিস ভ্যাকসিন না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। বাধ্য হয়েই চড়া মূল্যে বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুটি ভ্যাকসিনের মধ্যে আক্রান্তদের বিনামূল্যে রেবিস আরআইটি দেওয়া যাচ্ছে। অপর রেবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় দেওয়া যাচ্ছে না। আক্রান্তদের সেটি কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক তাদের কাছে নেই। স্বাস্থ্য বিভাগের কাছেও নেই মানুষের জলাতঙ্ক প্রতিরোধের রেবিস ভ্যাকসিন। এ অবস্থায় কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে রেবিস ভ্যাকসিন। দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকার কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র। সরেজেমিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, তিন দিন ধরে দলবদ্ধ পাগলা কুকুর আক্রমণ চালায় শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়, সর্দারপাড়া, শেখের ভিটা, বগাবাইদ, জিগাতলা, ডাকপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায়। এ খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শহরজুড়ে। কুকুর আতঙ্কে অনেকেই ঘরবন্দি করে রেখেছেন শিশু-কিশোরদের। বয়স্করাও ভয় পাচ্ছেন বাইরে বের হতে। কুকুরগুলো মানুষের দোকানে, চলন্ত ইজিবাইকে লাফিয়ে ওঠে মানুষকে কামড়াচ্ছে।
জিগাতলা এলাকার বাসিন্দা পুষ্পা বেগম বলেন, সকালে তিনি বাজার করার জন্য বাসা থেকে বের হন। তিনি হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই একটি কুকুর পেছন থেকে এসে তার পায়ে কামড় দেয়। হাত দিয়ে ছাড়াতে গেলে হাতেও কামড় দেয়। অনেক ধস্তাধস্তির পর জ্ঞান হারান তিনি। বউবাজার এলাকার আওয়াল মিয়া জানান, কুকুর এখন আমাদের এলাকার আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে দল বেঁধে ঘোরাফেরা করে এসব কুকুর। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের ওপর হামলা করছে এসব কুকুর। তাকেসহ সে এলাকার আরও ১৫-২০ জনকে কুকুর কামড়িয়েছে বলে জানান তিনি।
জিগাতলা এলাকার ছামেনা বেগম বলেন, কুকুরের ভয়ে এখন আমরা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাই। দোকানের ভেতরে এসে কুকুর কামড় দিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় চলাচল করা গাড়িতেও হামলা করছে এসব কুকুর।
