ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

৫১ বছরেও সেতু পায়নি ২৫ গ্রামের মানুষ

৫১ বছরেও সেতু পায়নি ২৫ গ্রামের মানুষ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর চরাঞ্চলের প্রায় ২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ বছরের পর বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নির্বাচন এলেই প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে যান প্রার্থীরা। তবে নির্বাচিত হওয়ার পর আর খোঁজ মেলে না জনপ্রতিনিধিদের। নদীপাড়ের সহজ-সরল মানুষ ৫১ বছর ধরে শুধু আশার বাণী শুনে যাচ্ছেন, অনেক দাবি করেও সুবর্ণখালী নদীতে বাস্তবায়িত হয়নি একটি সেতু। বুধবার দুপুরে সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপোগলদিঘা গ্রামের গামারতলা খেয়াঘাটে সেতু বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। পরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে এসব আক্ষেপের কথা জানান তারা।

এসময় কর্মসূচিতে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে যমুনা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- যমুনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বাবু, স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন জুয়েল, বিপ্লব মিয়া, সেলিম হোসেন প্রমুখ। এ সময় বক্তারা জানান, চরপোগলদিঘা গ্রামের একপাশে সরিষাবাড়ী ও অন্যপাশে কাজীপুর উপজেলা। এর মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ২০০ বছরের পুরোনো সুবর্ণখালী নদী। নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে সরিষাবাড়ী উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ২০-২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। সড়কপথে কাজিপুর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং নৌপথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার।

শুকনো মৌসুমে নদীতে চর পড়ে যায়। তখন যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই ওই এলাকার অধিকাংশ লোক যোগাযোগের জন্য এই রাস্তাটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু গামারতলা খেয়াঘাটে সেতুর অভাবে ওই এলাকার লোকজনসহ সরিষাবাড়ীর লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এরই মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন প্রার্থীরা, ছুটছেন ভোটারদের দোরগোড়ায়, দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। কিন্তু নির্বাচনের আগেই এলাকাবাসী এই সেতুর বাস্তবায়ন চান। কারণ আগের নির্বাচনেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এমপি প্রার্থীরা, তবে মিলেনি সেতু।

যমুনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বাবু বলেন, নদীর পশ্চিম পাশে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদণ্ডমাদ্রাসাসহ নানা স্থাপনা রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। অথচ সেতুর অভাবে তারা সময়মতো স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারে না। প্রায়ই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। শুকনো মৌসুমে আসতে পারলেও বর্ষায় পড়তে হয় দুর্ভোগে। এছাড়া কৃষকরা এ অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারেন না সঠিক সময়ে, বঞ্চিত হন ন্যায্যমূল্য থেকেও। তাই অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে সেতুর দাবি তাদের। পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ সম্পর্কে আমি অবগত। এখানে একটি সেতু অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান বলেন, সেতুটি এলজিইডির তালিকাভুক্ত। ইতোমধ্যে আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলেছি। অনুমোদন পেলে সেতু বাস্তবায়ন করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত