ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাগদা চিংড়িতে মড়ক হতাশ চাষিরা

বাগদা চিংড়িতে মড়ক হতাশ চাষিরা

বাগেরহাটে মৌসুমের শুরুতেই বাগদা চিংড়িতে মড়ক দেখা দিয়েছে। প্রচণ্ড তাপদাহ, স্বল্প পানি ও ভাইরাসের কারণে আশঙ্কজানক হারে মরে যাচ্ছে ঘেরের চিংড়ি। চোখের সামনেই বিক্রয়যোগ্য বাগদা চিংড়ি মরে পচে যাচ্ছে। মরা শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই মাছ শূন্য হয়ে যাচ্ছে ঘের। জেলায় সব থেকে বেশি মাছ মরেছে রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে চিংড়ি চাষে এমন বিপর্যয়ে বাগেরহাটের অধিকাংশ চাষি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। লোকসানের শঙ্কায় হতাশা বিরাজ করছে তাদের মাঝে।

এ অবস্থায় ঘেরের পানি বাড়ানোর পাশাপাশি চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছে মৎস্য বিভাগ। জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটে ৭২ হাজার ৭২৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ৭৭ হাজার ঘের রয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৫ হাজার ৬৭২ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন হয়েছিল। ২২-২৩ অর্থ বছরে একই পরিমাণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু মাছে মড়ক দেখা দেওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। রামপাল উপজেলার গিলাতলা গ্রামের চিংড়ি চাষি আবু সাইদ শেখ বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার বেশি পুঁজি নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছি। প্রচণ্ড তাপদাহ ও ভাইরাসের কারণে ৯০ শতাংশ মাছ মারা গেছে। কী হবে জানি না। পার্শ্ববর্তী উপজেলা মোংলার চিলা এলাকার সেলিম শেখ বলেন, লবণাক্ততার কারণে জমিতে ধান হয় না। চিংড়ির ওপর ভরসা করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। প্রতিবছর একটার পর একটা সমস্যা এসে হাজির হয়।

হয়তো ভাইরাস, নয়তো পানি কম, নয়তো ঝড়-বন্যা একটা না একটা সমস্যা থাকবেই। মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া এলাকার লুৎফর রহমান বলেন, এবার বাগদার উৎপাদন ভালো হয়েছিল। কিন্তু যখন প্রায় বিক্রির উপযোগী হয়েছে, তখনই শুরু হলো মড়ক। মূল টাকা ওঠা নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। শুধু আমার নয়, গত ১৫ দিন ধরে বেশির ভাগ ঘেরের মাছ মারা যাচ্ছে। তাদের ঘুরে দাঁড়োনোর জন্য সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির নেতারা। সভাপতি ফকির মুহিতুর রহমান সুমন বলেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য চাষিরা ধারদেনা করে চাষ শুরু করেছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেই মাছ মারা যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন তারা। চিংড়ি শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে চাষিদের পরিকল্পিতভাবে চাষের জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। মড়ক লাগার বিষয়টি স্বীকার করে বাগেরহাটের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল বলেন, মারা যাওয়া বাগদা চিংড়ির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত