যশোরের শার্শায় মুখিকচু (সারকচু) চাষ লাভজনক হওয়ায় এ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। কচু চাষে তুলনামূলক সার কম লাগে। এছাড়া রোগবালাই কম, উৎপাদন ভালো ও স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য পাইকারি বাজার আছে। তাই নিয়মিত কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের উৎসাহ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মুখিকচু চাষে আগ্রহ বাড়ায় এ কাজে নিম্ন আয়ের পরিবারের সদস্যদের খণ্ডকালীন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ায় বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা হচ্ছে। সব মিলিয়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বৃদ্ধি পাচ্ছে মুখিকচু চাষ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর শার্শা উপজেলায় ১১৫ হেক্টর জমিতে মুখিকচু সবজি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে কেরালখালী-বাসাবাড়ি, বসন্তপুর-পাড়িয়ারঘোপ, কন্দর্পপুর-ভায়না এলাকায়ই ৫০ হেক্টর জমিতে মুখিকচুর চাষ হয়েছে। উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, শত শত বিঘা জমিতে দেশি ও উচ্চ ফলনশীল জাতের মুখিকচু চাষ করা হয়েছে। সেই কচুর সবুজ পাতাণ্ডগাছ বাতাসে দোল খাচ্ছে। বাসাবাড়ি বাজারে কথা হয় পাড়িয়ারঘোপ গ্রামের মুখিকচু চাষি সিদ্দিক বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এ বছর সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে মুখিকচু চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং তেমন কোনো রোগবালাই না হওয়ায় প্রতি বিঘায় আনুমানিক ৭০-৮০ মণ কচু উৎপাদন হবে।
কচু তোলার সময় বৈরী আবহাওয়া না হলে সব খরচ বাদ দিয়ে ২ লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে।’ ভায়না গ্রামের গোলাম হোসেন বলেন, ‘এ বছর দেড় বিঘা জমিতে মুখিকচু চাষ করেছি। আগাম কচু তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি শুরু করেছি। কেজিপ্রতি দাম ৮০-১০০ টাকা। প্রতি কাঠায় তিন মণ কচু পাচ্ছি। কচুর দাম ও ভালো ফলন পেয়ে আমি খুশি।’ বাসাবাড়ি বাজারের হালিমা ট্রেডার্সের মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে চাষিরা পুরোদমে মাঠের মুখিকচু না ওঠালেও স্থানীয় বাজারে কয়েকজন কৃষক কচু তুলতে শুরু করেছেন। শুরুতে দামও বেশ চড়া। আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই পুরোদমে বাসাবাড়ি পাইকারি বাজারে শত শত মণ কচু উঠতে শুরু করবে।’ এ বাজারে শার্শা উপজেলা ছাড়াও ঝিকরগাছা উপজেলার চাষিরাও উৎপাদিত কচু গত বছরের মতো এ বছরও পাইকারি হিসেবে বিক্রি করবেন।