কদর বেড়েছে তালের শাঁসের

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

সারাদেশে টানা তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। একই অবস্থা চলছে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতেও। দিন-রাতের এই খরতাপ থেকে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে রসালো তালের শাঁসের কদর বেড়েছে পার্বত্য খাগড়াছড়িতে। রোদের তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাহিদা বাড়ছে তালের শাঁসের। গ্রীষ্মের অসহনীয় গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহূর্তের জন্য হলেও তৃষ্ণায় স্বস্তি এনে দিচ্ছে কচি তালের শাঁস। দাম কম হলেও তাজা ও ফরমালিনমুক্ত তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে, চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ার পাশাপাশি মুখের রুচি বাড়ায়। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সিসহ নানা ধরনের পুষ্টি চাহিদাও মিটছে তালের শাঁসে। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে ব্যস্ত সড়কের পাশে তালের শাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে তালের শাঁস খাচ্ছেন। কেউ আবার বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন রসালো এ ফল। মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও। পানছড়ির তালের শাঁস বিক্রেতা আব্দুল করিম বলেন, ‘একটি তালে দুটি বা তিনটি শাঁস থাকে। কেউ একটু তরল, আবার কেউ একটু শক্ত শাঁস পছন্দ করেন। আমি প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কাঁদি (ছড়া) তাল বিক্রি করি। গাছ থেকে তালের কাঁদি কেটে বাজারে এনে বিক্রি করা হয়। কষ্ট হলেও বেশ লাভ হয়।’

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে তালের শাঁস বিক্রি করছিলেন মো. ইয়াছিন ও আবুল কালাম। তিনি জানান, মাটিরাঙ্গার দুর্গম করল্যাছড়ি, রামশিরা ও অযোধ্যা থেকে তারা তাল সংগ্রহ করেন। আকারভেদে প্রতিটি তাল ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করে থাকেন। পাশের নোয়াখালী ও ফেনী থেকে তাল সংগ্রহ করার কথা জানিয়ে জালিয়াপাড়ার তালের শাঁস বিক্রেতা মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘গরমের সঙ্গে সঙ্গে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়েছে। প্রতি বছর বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে জ্যৈষ্ঠের শেষ পর্যন্ত তালের শাঁস বিক্রি করি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৫০০ তালের শাঁস বিক্রি করা হয়।’

তালের শাঁসের ক্রেতা মো. রফিক উল্যাহ বলেন, ‘তালের শাঁস একটি সুস্বাদু ফল। গরম থেকে এসে তালের শাঁস খেতে ভালোই লাগে। এবারের প্রচণ্ড তাপদাহে বেড়েছে তালের শাঁসের চাহিদা।’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. পরাগ দে বলেন, ‘তীব্র গরমে শরীর ও পেট ঠান্ডা রাখে তালের শাঁস। প্রতি ১০০ গ্রাম তালের শাঁসে ০.৮ গ্রাম খাদ্যোপযোগী খনিজ পদার্থ, ২০.৭ গ্রাম শর্করা, ০.৮ গ্রাম আমিষ, ০.৫ গ্রাম আঁশ আছে।’

এছাড়া ০.৫ গ্রাম খাদ্য আঁশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। অবাক করার মতো খাদ্যশক্তি আছে। প্রায় ৮৭ কিলো ক্যালোরি ও ৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকায় তালের শাঁস হাড় গঠনেও ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে তালের শাঁস নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে।’