‘ভিক্ষা করি না, কামাই করে খাই’

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

গোপালগঞ্জ শহরের পথে পথে বাদাম বিক্রি করে শারীরিক প্রতিবন্ধী ইয়াকিব শিকদার। এক হাত অচল তার। স্পষ্টভাবে কথাও বলতে পারে না। তবে শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা ইয়াকিবকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। সে বলে, ‘আমি ভিক্ষা করি না, হালাল পথে কামাই করে খাই। হালাল পথে বাদাম বিক্রি করে মা-বাবারে নিয়ে খাই।’ জীবন যুদ্ধে মাথা উঁচু করে লড়াই করে যাচ্ছে সে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু ভালো থাকার আশায় রোজ হাতে বাদাম নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান বিক্রির আশায়। ইয়াকিব শিকদার বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাড়ফা গ্রামের ছিকু শিকদারের ছেলে। তার বাবা পেশায় একজন ভ্যানচালক। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে তার যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তিন ভাইয়ের মধ্যে ইয়াকিব বড়। পরিবারের সবাইকে একটু সচ্ছলতা দিতেই তার পথে পথে বাদাম বিক্রি করা। প্রায় ছয় মাস ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বাদাম বিক্রি করছে সে। সকালে পান্তা ভাত খেয়ে বের হয়, বাড়ি ফেরে বিকেলে। সারাদিনে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা আয় করে সে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও ভিক্ষা করতে রাজি নয় ইয়াকিব। তার ইচ্ছা হালাল পথে সৎ উপার্জন করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুখে থাকার। ইয়াকিবের এমন মানসিকতা স্বাভাবিক মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা বলে মনে করেন সচেতন মহল। ইয়াকিব বলেন, সকালে বাদাম নিয়ে বের হয়ে সারাদিন ২০০ টাকাও ইনকাম করতে পারি না। বেচা শেষ হলে বাসায় চলে যাই। গরমে বাদাম খাইতে চায় না কেউ। আমার আব্বা খুব কষ্ট করে কামাই করে। তার কামাই দিয়ে সংসার চলে না। আমি বাদাম বেঁচে তারে সাহায্য করি। আমরা খুব কষ্ট করে কামাই করে খাই। বাদাম বিক্রি করার কিছু টাকা জমিয়ে একটি মুদি দোকান দেওয়ার ইচ্ছা আছে। গোপালগঞ্জ শহরের কলেজ মসজিদ রোডের প্রিয়াঙ্কা অফসেট প্রেসের মালিক পারভেজ বলেন, সারাদিন অসংখ্য ভিক্ষুককে ভিক্ষা দেই। তাদের অধিকাংশই সুস্থ সবল। তারপরও তারা ভিক্ষা করে। সেখানে একজন প্রতিবন্ধী হয়েও সে বাদাম বিক্রি করছে। আমি তাকে স্বাধুবাদ জানাই।