ছাদবাগানেই শতাধিক বনসাই

প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রথম চীন দেশে তৈরি হয়েছিল বনসাই, যা পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়তি অক্সিজেন তৈরিতে সহায়তা করে এই গাছ। এবার এই বনসাই তৈরিতে সফলতা দেখিয়েছেন মাগুরার পারলা বেলতলার বাসিন্দা আব্দুল হাসিব। নিজ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন বিশাল বনসাইয়ের বাগান।

বর্তমানে তার বাগানের টবে রয়েছে- বট, পাকড়, তেঁতুল, নিম, হিজল, তমাল, লেবু, বেল, কদবেল, কৃষ্ণচূড়া, বকুল, শিমুল, ডালিম, গাব, ডুমুর, শ্বেতচন্দন, জারুল, কামিনী, ছাতিম, চটকা, চায়না বাঁশ, বাগান বিলাস, বাবলা, শ্যাওড়া, এডেনিয়াম, রাঁধাচূড়া দেবদারুসহ তিন শতাধিক প্রজাতির গাছের বনসাই।

এছাড়া তার ছাদ বাগানে রয়েছে ৫০ প্রজাতির নানা ধরনের ক্যাকটাস। এর মধ্যে বট, পাকড়, দেবদার, অর্জুন, তেঁতুল, বকুল, দারুলসহ একাধিক প্রজাতির বনসাই রয়েছে। যার বয়স ২০ থেকে ২১ বছর।

ছোটবেলা থেকেই হাসিবের গাছের প্রতি রয়েছে প্রচণ্ড ভালোবাসা। মূলত ছোট থেকেই এলাকার পুরাতন বিল্ডিংয়ের ছাদ ও দেয়াল থেকে প্রথমে বট ও পাকড় গাছের চারা সংগ্রহ করে শুরু করেন বনসাই তৈরির কাজ। এর পর ধীরে ধীরে নানা প্রজাতির গাছের বনসাইয়ের সমাহার ঘটতে থাকে তার বাগানে। হাসিব বলেন, বাংলাদেশে বনসাই সোসাইটি নামে একটি সংগঠন থাকলেও দেশব্যাপী এর শক্তিশালী কর্মকাণ্ড না থাকায় প্রদর্শনীসহ মফস্বল শহর পর্যন্ত পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রে এ সংগঠনটি বিস্তৃতি লাভ করতে পারছে না। তবে এ ক্ষেত্রে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে বনসাইয়ের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে।

হাসিব জানান, বট, হিজল, তমাল, শ্বেতচন্দন, জারুল, বকুলসহ অনেক প্রজাতির গাছ বর্তমান সময়ে হারিয়ে যেতে বসেছে। যে কারণে এসব গাছের বনসাই তৈরি করে সেগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করছি। যেসব গাছের বাকল মোটা ও দীর্ঘদিন বাঁচে এসব প্রজাতির গাছই বনসাই তৈরির জন্য উপযোগী। গাছের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শখের কারণে তিনি বনসাই তৈরি করেন। যে কারণে তার দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে বনসাই তৈরি ও পরিচর্চার কাজে। তবে মাগুরাতে বনসাইয়ের চাহিদা না থাকলেও ঢাকাসহ বড় বড় শহরে বনসাইয়ের ব্যাপক বাণিজ্যিক গুরুত্ব রয়েছে।

অনেকেই মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বাসা-বাড়ি ও অফিসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বনসাই সংগ্রহ করে থাকেন। বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি বনসাইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হননি। বরং নিতান্তই ভালোলাগা, পরিবেশের কথা চিন্তা করে এবং হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ধরে রাখার জন্য এ কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তবে তিনি স্বপ্ন দেখেন, একটি সফল প্রদর্শনীর মাধ্যমে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে। ফলে প্রতিটি বাড়ি ও অফিসে শোভা পাবে অন্তত একটি করে বনসাই গাছ।