রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় অনলাইনে জমে উঠেছে তরুণ উদ্যোক্তাদের আমের ব্যবসা। গ্রাহকদের উপস্থিতি না থাকলেও মোবাইল ফোন ও সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যমে বেড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার কর্মতৎপরতা। বেড়েছে কেনা-বেচা। জানা যায়, করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর অনলাইনে আম ব্যবসা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন বেশ কিছু তরুণ উদ্যোক্তা। এ বছর নতুন করে যুক্ত হয়েছেন আরো একঝাঁক তরুণ উদ্যোক্তা। তাদের অধিকাংশই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অনলাইনে আম ক্রয়ের সুযোগ পেয়ে ক্রেতারাও বাড়িতে বসে এই অঞ্চলের বাগানের সুস্বাদু আমের স্বাদ গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন।
কয়েক বছর থেকে ভালো সাড়া পাওয়ায় এবার মৌসুম শুরুর আগে থেকেই এই অঞ্চলের আমের গুণগান লিখে অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছিলেন তরুণ উদ্যোক্তারা। ইতোমধ্যে হাট-বাজারের পাশাপাশি অনলাইনেও পুরোদমে শুরু হয়েছে আম কেনা-বেচা। কয়েক বছর থেকে আশপাশের যুবকরা ফোনকল, ইমো, ভাইবার, হোয়াটস্যাপ আর ফেসবুক মেসেঞ্জারে বিভিন্ন নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে আমের অর্ডার গ্রহণ করছেন। আর তা বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস ও ট্রেনসহ ঢাকাগামী বাসের মাধ্যমে ডেলিভারি করছেন।
সদ্য মাস্টার্স শেষ করা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী উপজেলার বড়পুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, করোনা মহামারি শুরুর পর তিনি বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে অলস বসে না থেকে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আম বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। গত বছর প্রায় তিন মাস প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় মণ করে আম অনলাইনে অর্ডার পেয়ে বিক্রি করেছেন। অনলাইনে আম ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল খুবই ভালো। গত বছর প্রায় পাঁচ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন তিনি। এবার অনলাইনে আরো বেশি আম বিক্রি হবে বলে আশা করছেন। ইতোমধ্যে অনলাইনে মার্কেটপ্লেস ও ফেসবুক পেজ দেখে আম নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতাদের ফোন পাচ্ছেন।
ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার পেয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে আম কিনে কুরিয়ারের মাধ্যমে আম পাঠাচ্ছেন তারা। তবে কুরিয়ার খরচ কম হলে তাদের সুবিধা হতো বলেও জানান। ঢাকা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আম ক্রেতা এক শিক্ষিকা রুনা বেগম জানান, বিগত সময়ে বাজার থেকে আম কিনে খেয়েছি। তবে এবারে অনলাইনে আম কিনে যে স্বাদ পেয়েছি তা এর আগে কখনোই পাইনি। অনলাইনে আম বিক্রির ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. ভবসিন্ধু রায় বলেন, যারা অনলাইনে আমের ব্যবসা করছেন, তারা অধিকাংশই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিংবা বেকার তরুণ ও যুবক। তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বাড়িতে বসে না থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তারা আয়-রোজগার করছেন। ফলে তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।