ঈদুল আজহার আর কয়েক দিন বাকি। আসন্ন কোরবানিকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৬টি গবাদি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার গোখাদ্যের দাম অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানির পশু প্রস্তুতে ব্যয় বেশি হয়েছে। তবে দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকরা। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্রেতারাও। যদিও গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সংখ্যা জেলার চাহিদার তুলনায় বেশি রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। আর ৯ উপজেলায় মোটাতাজা করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৬টি গবাদি পশু। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ষাঁড় ১ লাখ ৭১ হাজার ৭১২টি, মহিষ ১ হাজার ৪০৫টি, ছাগল ১ লাখ ৫৫ হাজার ও ভেড়া ৬১ হাজার ১৩৩টি। এখান থেকে জেলার চাহিদা মিটিয়ে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৬টি পশু দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যাবে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার আরাভ এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান সিহাব বলেন, এ ফার্মে প্রায় শতাধিক কোরবানিযোগ্য পশু দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা হয়েছে। তবে গোখাদ্যের দাম বেশি থাকায় পশু অনুযায়ী দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। একই উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল মমিন বলেন, প্রতি বছর ভাইয়েরা মিলে কোরবানি দিই। কিন্তু এবার গরুর যে দাম, তাতে কোরবানি দিতে পারব কি-না সন্দেহ।
ঊর্ধ্বগতির গোখাদ্যের বাজার মূল্যে পশুর প্রকৃত দাম তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন রায়গঞ্জ উপজেলার খামারি আব্দুল মোত্তালেব। তিনি বলেন, যে গরুগুলো ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করার আশা করছি, সেগুলোর পেছনে আমাদের ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। একই উপজেলার চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুবেল আহম্মেদ বলেন, গোখাদ্যের মূল্য বেশি থাকায় বাড়ছে কোরবানি পশুর দাম। এতে করে সমাজের অনেকেই অর্থের অভাবে এবার কোরবানি দিতে পারবে না।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানান, এ উপজেলায় গোখামারের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। তবে যারা প্রকৃত খামারি তাদের গোখাদ্যের চাহিদা মেটাতে উন্নতমানের ঘাসের চাষ করতে হবে। এতে খাদ্য খরচ কম হবে। তাছাড়া ঘাস গবাদি পশুর জন্য খুবই উপকারী। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার বলেন, এবার জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু বিক্রয় হবে বলে আমরা আশা করছি।
জেলায় ৩১টি স্থায়ী ও ১৬টি অস্থায়ী পশুর হাট থেকে ক্রেতারা পশু সংগ্রহ করতে পারবে। সেই সঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে পশুর ছবি আপলোড করে অনলাইনেও বিক্রি করা হবে। আর গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে খামারিরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।