পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে চলমান সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা। গত বৃহস্পতিবার পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তারা নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় নির্মাণাধীন সড়কের কিছু অংশ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি ওই সড়কের প্রবেশ পথ রেলপাত দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়।
উপজেলা প্রকৌশল ও রেলওয়ে বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসকের ঘাট উন্নয়ন তহবিল থেকে ঈশ্বরদীতে উপজেলা পরিষদকে এলজিইডির মাধ্যমে উন্নয়নের জন্য ২৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় পদ্মা নদীর তীরে সাঁড়া ইউনিয়নের ‘সাঁড়া রানাখড়িয়া তড়িয়া মহল’ এবং পাকশী ইউনিয়নের ‘বামনগাঁও নৌকা পারাপার ঘাট’ উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ কাজের টেন্ডার পায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিলন মাহমুদ তন্ময়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকৌশল বিভাগের আয়োজনে ১১ জুন নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে নদীর ঘাট থেকে ২০৭ মিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
অনুমতি না নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে রাস্তা নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত আরসিসি পিলারসহ নির্মাণাধীন অন্য কাজ রেল কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার গুঁড়িয়ে দেয়। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, যে স্থানে ঘাট উন্নয়নের কথা বলে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে তা টেন্ডারে উল্লেখিত ঘাট নয়। টেন্ডারে উল্লেখিত বামনগাঁও নৌকা পারাপার ঘাট অনেক আগেই ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে। উপজেলা সড়ক কৌশল বিভাগ জানায়, যে স্থানে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে সেটি আদৌ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি কি-না তার ভূমি অফিস যাচাই-বাছাই করে দেখেছে।
ওই এলাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এবং স্থানীয় পর্যটকরা নিয়মিত সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। যে কারণে রাস্তা পাকা করা হচ্ছিল। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলী (ডিইএন-২) বীরবল মণ্ডল বলেন, রেল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে আরসিসি কলাম করে এবং ঢালাই দিয়ে যে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছিল, সে কাজ আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের সময় ব্রিজ রক্ষার জন্য প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর থেকে গাইড ব্যাংক নির্মাণ করা হয়। রাস্তা নির্মাণের ফলে ব্রিজের পিলার, গাইড ব্যাংক ও গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, এখানে সিম্পল একটা রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে। এখানে নদী পারাপারের ঘাট আছে। ঘাটে একটি যাত্রী ছাউনি এবং রাস্তার কাজ করছি। কাদার কারণে মানুষ হাঁটতে পারে না। রেলওয়ে কাজ করতে না দেওয়ায় আপাতত বন্ধ আছে। কাজ করতে না দিলে এটা আমরা অন্য ঘাটে স্থানান্তর করব। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। সড়ক নির্মাণে বাধার বিষয়টি শুনেছি। আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।