প্রেমের সম্পর্ক থেকে দু’জনের সম্পর্ক গড়ায় বিয়ে পর্যন্ত। তবে বিয়ের পর স্বামী যৌতুকের জন্য নির্যাতন করায় আদালতে মামলা হয়। অবশেষে দুই পক্ষের সালিশ বৈঠকে বিয়ে বিচ্ছেদের শর্তে মামলা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে খুশি হয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন মো. মিজান মোল্যা নামের এক যুবক।
গত বুধবার বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের রুদ্রবানা গ্রামে। মিজান মোল্যা রুদ্রবানা পশ্চিম পাড়া এলাকার ইলিয়াস মোল্যার ছেলে। জানা যায়, মিজান মোল্যা তাদের আত্মীয় মুসা মোল্যার মেয়ে নূরজাহান বেগমকে ৯ মাস আগে বিয়ে করেন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ৯ মাসের সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশও হয়। তাতে সুরাহা না হওয়ায় ২ মাস আগে নুরজাহান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মিজানের নামে মামলা দায়ের করেন। পরে গত বুধবার বিকেলে দুই পক্ষ বসে বিয়ে বিচ্ছেদের শর্তে মামলা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এতে ছেলে পক্ষ স্বস্তি পায়।
এরপর স্থানীয় বাজার থেকে আধামণ দুধ এনে মিজান মোল্যা গোসল করেন। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরে। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরাল হয়। মো. মিজান মোল্যা বলেন, বিয়ের তিন মাস পর থেকে সংসারে অশান্তি বাড়তে থাকে। আমার স্ত্রী আমার নামে মামলা করে হয়রানি করতে থাকে। মামলার একপর্যায়ে আমি নিয়ত করি স্ত্রীর হাত থেকে মুক্তি পেলে আধামণ দুধ দিয়ে গোসল করব। ফয়সালা হওয়ায় নিয়ত পূর্ণ করলাম।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবর আলী বলেন, আমার বড়িতেই এই সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্তে দুই পক্ষই খুশি। বিচ্ছেদ একটি হৃদয়বিদারক ব্যাপার হলেও দুই পক্ষই স্বস্তি পেয়েছে। বানা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. রাজ ইসলাম বলেন, নারী ও শিশু আদালত থেকে ইউনিয়ন পরিষদে তাদের করা মামলার বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ২২ জুনের মধ্যে সালিশের মাধ্যেমে সমাধানের চেষ্টার জন্য নোটিশ করেন। দুই পক্ষই আমার এলাকার বাসিন্দা ও ঘনিষ্ঠ। তারা নিজেরাও আত্মীয়। ছেলের বাবা ও মেয়ের বাবা সম্পর্কে আপন মামাতো ফুপাতো ভাই। ছেলে ও মেয়ের মধ্যে বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের সংসার শুরুর পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। বিচ্ছেদে দুই পক্ষই খুশি।