শীতের শুরুতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় ব্রণের দাপট বৃদ্ধি পায় দ্রুত। লাল লাল, দানাদার, কোনোটি বেশ উঁচু। কিশোর ও তরুণদের একটা বড় দুশ্চিন্তা এই ব্রণ। ছেলেদেরই এ সময় এটা বেশি হয়, কখনো কখনো মেয়েদেরও ব্রণ বেশি হতে পারে। কিছু কিছু সময় ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই ব্রণের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। কারো পরিবারে বেশি ব্রণ হওয়ার ইতিহাস রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কৈশোরে ব্রণ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। এটা এমনিতেই সেরে যায়। তবে কখনো কখনো সমস্যা একটু বেশি প্রকট হয়ে ওঠে, বড় বড় দানা হয়, পুঁজ জমে ভেতরে, ব্যথা করে, সঙ্গে দেখা দেয় মানসিক অশান্তি। ময়লা কিংবা তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের কারণে ত্বকের তেল গ্রন্থি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন ত্বকের ভেতরের দিকে তেল জমে তৈরি হয় ব্রণ। ব্রণ হওয়ার পেছনে বয়স ও বংশগত কারণও থাকে। বাবা অথবা মা যে কারও কৈশরে ব্রণের সমস্যা থাকলে সন্তানেরও ব্রণ দেখা দিতে পারে। বয়ঃসন্ধি পর্যায়ে শরীরে হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে শরীরে সিবামের মাত্রা বাড়ে এবং মুখ, পিঠ, বুক ইত্যাদিতে ব্রণ দেখা দেয়। ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত ঘুম ইত্যাদি ব্রণ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। ব্রণ হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে মানসিক চাপ। তৈলাক্ত প্রসাধনীর ব্যবহারে ত্বকে ব্রণ হতে পারে। ত্রিশ থেকে চল্লিশ বছর বয়স্ক নারীদের মধ্যেও অনেক সময় ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় প্রসাধনীর পরিবর্তন ও তা মানানসই না হওয়ার কারণে ব্রণ দেখা দেয়। তাছাড়া হরমোন জনিত বিষয়ও ব্রণের জন্য দায়ী। তাই ব্রণ চিকিৎসায় এ সব বিস্তারিত তথ্য জানা প্রয়োজন।
প্রতিরোধ : খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন ব্রণ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। শীতে সবুজ শাক-সবজি বেশি পাওয়া যায়, বেশি বেশি গ্রহণ করতে হবে। কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের মাত্রা কমাতে হবে। দৈনিক কমপক্ষে তিন লিটার পানি পান করুন। তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। স্ট্রেস বা মানসিক চাপমুক্ত থাকুন। নখ ও পিন দিয়ে ব্রণ খুঁটবেন না, চেপে পুঁজ বা রস বের করার চেষ্টা করবেন না।
চিকিৎসা : শীতে সবসময় মুখমণ্ডল পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন। তার মানে এই নয় যে, দিনে বার বার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে, বরং এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। ক্রিম বা মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। জেল বা ক্রিমে থাকা বেঞ্জয়েল পারক্সইড ও রেটিনল মুখের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।