ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শীতের রোগ-বালাইয়ের ব্যাপারে সচেতন হোন

শীতের রোগ-বালাইয়ের ব্যাপারে সচেতন হোন

প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল। ঋতুবৈচিত্র্যের কারণে এরইমধ্যে বদলে গিয়েছে এই সময়ের আবহাওয়া ও প্রকৃতি। রাতের দিকে একটু একটু করে বেশ ঠান্ডা বাতাস বইছে। টেরও পাওয়া যাচ্ছে। আর দিনের বেলা অনুভব হচ্ছে কিছুটা গরম। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সময় আমরা নানা ধরনের অসুখে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। একটু বেশিই অসুস্থ হয়ে পড়ি। শীত যতদিন থাকে, এই চলমান আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে আমাদের একটু বেশিই কষ্ট হয়ে থাকে। তবে প্রকৃতিতে যখন তীব্র শীত এসে হানা দেয়, তখন মানুষ পরিবেশের সঙ্গে এক ধরনের সামঞ্জস্য তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়। কিন্তু এই সময়ে (শীতের শুরুর আগে এবং শীত চলমান অবস্থায়) বেশিরভাগ মানুষ বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি কিংবা জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ঝুঁকির পরিমাণ অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই থাকে। শীতকালে ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি ঘটে থাকে। সঙ্গে ব্যাকটেরিয়াসহ অন্যান্য জীবাণুর মাধ্যমেও সংক্রমণ হতে পারে। বেশি প্রবণতা দেখা যায় ভাইরাল ফিভার, যাকে আমরা বলে থাকি ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশি, জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি-কাশি। এসব সমস্যা এই সময় খুব বেশি দেখা যায়। যাদের হাঁপানিজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে শীতকালে সমস্যাটা আরও বেশি প্রকট আকার ধারণ করে থাকে। যাদের ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্যও শীতকাল মারাত্মক সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। তাই শীতের শুরুতেই আমাদের উচিত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যেমন- ঠাণ্ডা না লাগতে দেওয়া, ঠাণ্ডা পানি পান না করা, হালকা কুসুম গরম পানি পান করা, গরম জামা-কাপড় পরিধান করা, ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা এবং আগে থেকে হাঁপানির সমস্যা থাকলে অবশ্যই ইনহেলার ব্যবহার করা উচিত। ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত জ্বরে সাত দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে সেকেন্ডারি কোনো ইনফেকশন ঘটলে রোগমুক্তিতে কিছুদিন বেশি সময় লাগতে পারে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় পড়ার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখুন। জ্বর বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে অথবা যে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে (নিজের অথবা পরিবারের যে কারও) চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আরেকটি কথা, যে কোনো ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে নিজেই ওষুধ নির্বাচন করবেন না। পরিবারের ছোট্ট সোনামনি থেকে শুরু করে কাউকেই খাওয়াবেন না, নিজেও খাবেন না। কারণ আপনি ডাক্তার নন। ধারণার ওপর নির্ভর করে ওষুধ নির্বাচন এবং দোকান থেকে এনে তা সেবন করা মানে নিজের ও পরিবারের বিপদ ডেকে আনা। সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করুন। রোগের বিষয়ে সচেতন হোন। নিরাপদে থাকতে পারবেন। বাইরে বের হলে ধুলোবালিমুক্ত থাকার জন্য মাস্ক পরুন।

লেখক : সহকারী পরিচালক, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত