চুলের আধুনিক চিকিৎসা পিআরপি
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল
পিআরপি কী: মাথার চামড়ায় বিশেষ প্রোটিন সরবরাহের একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতি প্রয়োগে শরীর থেকে রক্ত নিয়ে তা থেকে প্লাটিলেট (অণুচক্রিকা) ও প্লাজমা (রক্তের বর্ণহীন সাদা অংশ) আলাদা করা হয়। মানুষের নিজের রক্তটাই অন্য একটা অবস্থায় নিয়ে সেটা মাথার ত্বকে দেওয়া হয়। এ উপাদানে থাকে প্রচুর প্রোটিন, যা প্রাকৃতিকভাবে চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আবার কিছু রয়েছে থেরাপি পর্যায়ে, প্রোটিনসমৃদ্ধ থেরাপি। এ প্রোটিনসমৃদ্ধ প্লাজমা দিয়েও চুলের টাকপড়া প্রতিরোধ করা যায়।
পিআরপি কীভাবে কাজ করে: প্লাটিলেটসমৃদ্ধ প্লাজমায় থাকে অনেক পুষ্টিকর উপাদানের সমাহার। যেমন- পিডিজিএফ, টিজিএফ, ডিইজিএফ, আইজিএফ, এফজি এবং টিএসফি-ওয়ান, ইত্যাদি। যা রোগীর হেয়ার ফলিকল এবং আশপাশের মাইক্রোসেলগুলোকে, বিশেষ করে হেয়ার গ্রোথ সেল এবং স্টেমসেলগুলোকে স্টিমুলেট করে টাক মাথায় চুল গজাতে সাহায্য করে।
পিআরপি কতটা কার্যকর: পিআরপি থেরাপি সবার ক্ষেত্রে কার্যকর নয় এবং কারও কারও ক্ষেত্রে ফল দিলেও সেটা তাদের সবার ক্ষেত্রেও সমান ফলাফল দেয় না। যদিও বলা হয়ে থাকে- অ্যান্ডোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বা বংশগত টাকে এটি কাজ করে থাকে কিন্তু বাস্তবে এই ক্ষেত্রে ততটা ফলাফল দেখা যায়নি। যার কারণে বংশগত টাক রোগীদের বেলায় ডাক্তাররা হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যেটা অনেক ব্যয়বহুল। জেনে রাখা প্রয়োজন, যাদের মাথায় একেবারে টাক পড়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে পিআরপি থেরাপি অকার্যকর। যিনি পিআরপি চিকিৎসা নিয়ে থাকেন, তিনি ৬ মাসের মধ্যে এর ফলাফল কিছুটা বুঝতে পারেন তবে পুরোপুরি ফলাফল বুঝতে আপনাকে ১ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এতে চুলপড়া রোধ করা সম্ভব কিন্তু এটি স্থায়ীভাবে নয়। তবে পিআরপি চিকিৎসা কতখানি উপকারী, তা নির্ভর করে মাথার চামড়ার ভেতরে চুল উৎপাদনকারী কোষ কতটুকু রক্ষা। কতটুকু রয়েছে বা আদৌ আছে কি না, তার ওপর। ভেতরে জীবিত কোষ না থাকলে এ চিকিৎসা পদ্ধতির ফল পাওয়া সম্ভব নয়। চুল উৎপাদনকারী কোষ যথেষ্ট পরিমাণে জীবিত থাকলে ৬ মাসের আগ থেকেও কিছুটা ফল পেতে শুরু করবেন। বিস্তারিত আরো জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
লেখক : অধ্যাপক ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল অধ্যাপক বিভাগীয় প্রধান। কামাল হেয়ার এন্ড স্কিন সেন্টার বিটিআই সেন্টার। ১৪৪ গ্রিনরোড ঢাকা।