বর্তমান সময়ের ২টি ভয়াবহ চর্মরোগ হলো স্ক্যাবিস ও টিনিয়াসিস। নিচে এর বিস্তারিত চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা করা হলো।
স্ক্যাবিস : অনেকেই হয়তো বুঝতে পারছেন না, কিন্তু বর্তমানে ঝপধনরবং একটি মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিটি হাসপাতালের আউটডোর এখন স্ক্যাবিস রোগীর ঢেউ সামলাতে ব্যস্ত।
চিকিৎসা : ১) স্ক্যাবিস রোগের মূল চিকিৎসা হলো সঠিক কাউন্সেলিং, তাই অন্য রোগীদের তুলনায় তাদের একটু হলেও বেশি সময় দিতে হবে। ২) ব্যস্ততার জন্য এবং রোগীদের অসচেতনতার জন্য অনেক রোগীই উপদেশ অনুযায়ী চিকিৎসা অনুসরণ করতে পারেন না, তাই আলাদা লিফলেট-সিল ব্যবহার করে উপদেশ+ওষুধের ব্যবহারবিধি বুঝিয়ে দেয়া যেতে পার। ৩) যে সকল রোগী সঠিক নিয়ম অনুসরণ করার পরেও পুরোপুরি ভালো হন না, তাদের ক্ষেত্রে জব- Infection/Post scabies Hypersensitivity/ Poor compliance বিবেচনা করা যেতে পারে। ৪) যদিও ৫% Permethrin এখনো Treatment of Choice, তবুও কিছু কিছু যায়গায় Permethrin Resistance নিয়ে কিছু গবেষণা হচ্ছে, বাস্তবেও আমরা তার কিছু নমুনা দেখতে পাচ্ছি, তবে এখনো এটা নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা ঠিক হবে না। ৬) ওজন ১৫ কেজির বেশি + গর্ভবতী না হলে বাসার সবাইকে অন্তত এক ডোজ Ivermectin (0.2mg/kg) দিতে ভুলবেন না। ৭) স্ক্যাবিস নিয়ে সন্দেহ হলে অবশ্যই Private Parts (gentitalia/breast) ভালো করে পরীক্ষা করবেন, এসব জায়গায় ষবংরড়হ থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
টিনিয়াসিস : বাংলাদেশের মত আর্দ্র আবহাওয়ার দেশে ফাংগাল ইনফেকশন ঘরে ঘরে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তাইতো চুলকানী রোগ নামে খ্যাত ও চামড়ার সবচেয়ে কমন রোগ ফাংগাল ইনফেকশন ‘টিনিয়াসিস’ অথবা ‘রিং ওয়ার্ম’। চামড়ায় রিং এর মত ষবংরড়হ বানায়, তাই এই নাম। ডার্মাটোফাইট নামের এক গ্রুপ ফাংগাস এই রোগ সৃষ্টি করে। মজার বিষয় হলো- এই রোগের ২টা নামেই প্যাঁচের কোনো শেষ নাই। যেমন- রিং ওয়ার্ম শুনলে মনে এটা বুঝি কৃমি রোগ। কিন্তু কৃমি রোগ না। আবার টিনিয়াসিস বললে মনে হয় সিস্টোড টিনিয়া সোলিয়ামণ্ডস্যাজিনাটা দিয়ে কৃমি হচ্ছে বুঝি। এটাও ভুল। ডার্মাটোফাইট এর টিনিয়া বানান Tinea, শিস্টোড এর টিনিয়া বানান Tinea.
যাই হোক- এটা ভয়ংকর মাত্রায় ছোঁয়াচে রোগ। তাই রোগীর কন্টাক্টে যারা আসে, সবারি হয় এই রোগ। তাই গ্রুপ চিকিৎসা লাগে এই রোগে। আর হিউমিড আবহাওয়াতে বারবার হয়।
এন্টিফাংগাল ড্রাগ হিসেবে টপিক্যাল মাইকোনাজোল বেস্ট, আর সিস্টেমিক দিলে ফ্লুকোনাজোল বেস্ট। এছাড়া অনেক রোগী যেটি করে সেটি হলো, আজ ক্রিম লাগায় তো, কাল একটু ভালো বোধ করলেই আর লাগায় না, অর্থাৎ ওষুধে অনিয়মিত। অথবা আপনি দিলেন ৪ সপ্তাহ, সে ২ সপ্তাহ ব্যবহার করে ভালো হয়ে বাকি দিনগুলোয় নেয়া বন্ধ করে দেয়। তাই এটি ভালোভাবে বলে দিতে হবে- নিতে হবে নিয়মিত, ভালো হওয়ার পরও ব্যবহার করে যেতে হবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। আর অবশ্যই চুলকাবে না- চুলকালে আরো ছড়াবে- আর এজন্য প্রয়োজনে oral antihistamine. পাশাপাশি হিস্ট্রি নিতে হবে রোগী পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে কি না। পরিধেয় কাপড়, বিছানার চাদর, ব্যবহৃত আসবাবপত্র ভালোভাবে নিয়মিত পরিষ্কার করে কি না।