গণতন্ত্রের বদলে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নেপালে বিক্ষোভ করেছেন হাজারও মানুষ। গত বুধবার তারা রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট এ দেশটি বর্তমানে গণতান্ত্রিক হলেও এ শতাব্দির শুরুতে এটি ছিল রাজতান্ত্রিক। তবে নানা নাটকীয়তার পর গত দশকে নেপালে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে।
জানা যায়, রাজতন্ত্রের অবসান ঘটলেও দেশটিতে এখনো রাজতন্ত্রের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সমর্থক রয়ে গেছেন। তাই নেপালের সাবেক রাজপরিবারের হাজার হাজার সমর্থক গত বুধবার পুনরায় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভে নামেন।
বিক্ষোভকারীরা সমাবেশের সময় রাজা পৃথ্বী নারায়ণ শাহর মূর্তির চারপাশে জড়ো হন। নেপালের সাবেক এ রাজা ১৮ শতকে শাহ রাজবংশের সূচনা করেছিলেন। এই শাহ রাজবংশের শেষ রাজা ছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। নানা নাটকীয়তার পর তিনি রাজার পদ ছাড়তে বাধ্য হন। পরে ২০০৮ সালে নেপালে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটে ও প্রজাতন্ত্রের আবির্ভাব হয়। এরপর থেকেই দেশটি গণতান্ত্রিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
জানা গেছে, প্রতি বছরই পৃথ্বী নারায়ণের জন্মবার্ষিকীতে তার ভক্ত ও সমর্থকরা রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। এর আগের কিছু সমাবেশে পৃথ্বী ভক্ত ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভকারীরা সহিংস হয়ে উঠেন। তবে বুধবারের সমাবেশটি ছিল শান্তিপূর্ণ। এছাড়া, মোতায়েন থাকা পুলিশ এ সমাবেশের ওপর কঠোর নজরদারি রেখেছিল। এদিনের সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা রাজতন্ত্রের প্রশংসাসূচক নানা স্লোগান দেন। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার রাজা পৃথ্বী নারায়ণের জন্মদিন উপলক্ষ্যে গত বুধবার নেপালে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। দাহাল নেপালে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটাতে ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মাওবাদী কমিউনিস্ট বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেন।
বিক্ষোভ করলেও পৃথ্বী নারায়ণের জন্মদিন উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি ঘোষণা ও সমাবেশ করার অনুমতি দেয়ায় দাহাল সরকারকে ধন্যবাদকে জানান বিক্ষোভকারীরা।
রাম প্রসাদ উপ্রেতি নামে অবসরপ্রাপ্ত এক চিকিৎসক বলেন, নেপালে রাজতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা একজন আনুষ্ঠানিক রাজা খুঁজছি।
