ইরানে বিক্ষোভ প্রশমনে কৌশলী খামেনি

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি হয়তো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। দেশটিতে হিজাব না পরার কারণে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সি মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে নৈতিকতা পুলিশ। আটকের পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির।

ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় ইরানজুড়ে। দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, বহু বছর ধরে আয়াতুল্লাহ খামেনির ‘স্বৈরাচারী’ শাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদী আন্দোলন এটি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এই আন্দোলনে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসে দেশটির নারীরা।

কিন্তু বিক্ষোভ শুরু হওয়ার চার মাস পর ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ এসব আর্তনাদ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, যেখানে বিক্ষোভ সব থেকে বেশি সময় ধরে চলছিল সেখানে এখন নিরাপত্তারক্ষীরা পাহারা বসিয়েছেন। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রশংসামূলক প্রচুর ব্যানার চোখে পড়ছে। তবে এখনো ইরানিরা ক্ষুব্ধ।

দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, দেশটিতে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে শতাধিক প্রতিবাদকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। শীর্ষ ফুটবলার, চলচ্চিত্র তারকা, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে আরও সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। একজন ইরানি সাংবাদিক বলেন, অনেক মানুষ হতাশ হয়ে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যাচ্ছেন।

এবারের বিক্ষোভ ঘিরে খামেনি শুরুতে তেমন কিছু বলেননি। কিন্তু ক্যান্সার থেকে বেঁচে আসা ৮৩ বছর বয়সি এ শীর্ষ ধর্মীয় নেতা এখন সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। তিনি বিশ্বস্তদের নিয়মিত উপদেশ দিচ্ছেন। নারীদের বিশাল সমাবেশে অংশ নিয়ে কথা বলছেন ও উপদেশ দিচ্ছেন। দেশটির আলেমদের সঙ্গেও আলোচনা করছেন।

খামেনিবিরোধীদের অধিকাংশই এখন শান্ত হয়ে গেছেন। ছন্দময় জুটির স্লোগান আর শোনা যায় না। ইরানিরা আন্দোলন কর্মসূচিতে একত্রে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এখন অনেকেই চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

তবে অনেকে বলছেন, খামেনি যদি এখনই ভেবে বসেন, তিনি জয়ী হয়েছেন তাহলে সেটা ভুল। আন্দোলনে অংশ নেয়া অধিকাংশ ইরানি নাগরিক এখনো সরকারবিরোধী মনোভাব পোষণ করছেন।