চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। চিঠিটি সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে চীনা প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বুধবার তার স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কা এ তথ্য জানান।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে জেলেনস্কি বারবার জিনপিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, জেলেনস্কির আশা ছিল, বেইজিং ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর তার প্রভাব ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করবে।
জিনপিংকে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে জেলেনস্কি সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। আমি চীনের প্রেসিডেন্টকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আশা করি, বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ বার্তার প্রতিক্রিয়া পাব।
এর আগে ২০২২ সালের আগস্টে জেলেনস্কি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট পত্রিকাকে জানিয়েছিলেন, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জিনপিংকে আলোচনায় বসার জন্য বলেছেন। তার দাবি ছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংলাপটি সহায়ক হবে।
এদিকে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার ঠিক আগ দিয়ে চীন সফরে যান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই সময় বিশ্বের প্রভাবশালী এ দুই নেতা তাদের অংশীদারত্বে কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না বলে ঘোষণা দেন। এর কিছুদিন পরই ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া।
আল-জাজিরা বলেছে, যুদ্ধের শুরু থেকেই নিজেকে নিরপেক্ষ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে আসছে চীন। এছাড়া, যুদ্ধ চলাকালীন মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করেছে বেইজিং। বিশেষ করে, জ্বালানি খাতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।
তবে কিছু বিশ্লেষক ইঙ্গিত দিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের অবসান ঘটাতে প্রয়োজনীয় আলোচনা বাস্তবায়নে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারেন শি জিনপিং। এছাড়া, গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বৈঠক করেন চীন-ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টির শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এ সময় তিনি যুদ্ধ আরও দীর্ঘ হওয়া ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানান।