ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইরান থেকে যেভাবে ড্রোন যাচ্ছে রাশিয়ায়

ইরান থেকে যেভাবে ড্রোন যাচ্ছে রাশিয়ায়

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তায় নিজেদের নৌকা ও রাষ্ট্রীয় সংস্থার বিমান ব্যবহার করে উন্নত সশস্ত্র ড্রোন সরবরাহ করছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান। দেশটির বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে গত রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে ভয়াবহ যুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া। পশ্চিমাদের হুমকি উপেক্ষা করে দেশটিতে হামলা অব্যাহত রেখেছেন পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে চলা যুদ্ধে মস্কোকে সামরিক সহায়তায় দিয়ে আসছে তেহরান।

এ বিষয়ে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসেছে, গত বছরের নভেম্বরের দিকে রাশিয়ার শীর্ষপর্যায়ে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রযুক্তিবিদরা তেহরান সফর করেন। ওই সময় রুশ নৌ বাহিনীকে ১৮টি ড্রোন দেয়া হয়।

তাদের সুবিধার্থে সামরিক অস্ত্র প্রদর্শন করে তেহরান। ১০ সদস্যের রুশ প্রতিনিধি দল ছয়টি মোহাজের-৬ ড্রোন বাছাই করে। এগুলোর রেঞ্জ প্রায় ২০০ কিলোমিটার এবং প্রতিটি ডানার নিচে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করা যায়। এছাড়া রয়েছে ১২টি শাহেদ। এগুলো আকাশ থেকে সহজেই ভূমিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। অন্যান্য ড্রোনের চেয়ে দামও কম।

যুদ্ধে মস্কোকে এখনও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে তেহরান। কিন্তু দেশটির দাবি, তারা ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে কোনো সামরিক সহায়তা দেয়নি। তবে ওয়াশিংটন বলেছে, এ বিষয়ে তাদের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে।

গত বছরের আগস্টে মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেন, মস্কোর জন্য শাহেদণ্ড১৯১ এবং ১২৯ মডেলের ড্রোন প্রদর্শন করে তেহরান। মস্কোর কাছে বিক্রির উদ্দেশে এসব প্রদর্শন করা হয়। কিছুদিন পর মোহাজের-৬ ড্রোনের মাধ্যমে ইউক্রেনে হামলার প্রমাণ পায় কিয়েভ। পরবর্তীতে বেশ কিছু ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে দ্য গার্ডিয়ানের সামনে উপস্থাপন করে জেলেনস্কির প্রশাসন। যুদ্ধের একবছর পূর্তি কেন্দ্র করে ইউক্রেনে আবারও বড় হামলার ছক কষছে রুশ প্রশাসন।

ফলে রাশিয়া আবারও মিত্র ইরান ও উত্তর কোরিয়া থেকে সামরিক সহায়তা নিতে পারে বলে ধারণা পশ্চিমা নেতাদের। এমনকি কিয়েভের পক্ষ থেকেও শঙ্কা জানানো হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে ইউক্রেনের ডনেস্ক, খারকিভসহ একাধিক জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। পাল্টা লড়াই চালাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। গার্ডিয়ানে এসেছে, সম্প্রতি তেহরানের কাছ থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে মস্কো।

যদিও এ বিষয়ে দুই দেশ কোনো চুক্তিতে পৌঁছেছে কি না, তা নিশ্চিত হতে পারেনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। জানা গেছে, রাশিয়ায় পাঠানো অধিকাংশ ড্রোন গোপনে কাস্পিয়ান সাগরের উপকূলে একটি ঘাঁটি থেকে ইরানি জাহাজে পাঠানো হয়েছিল। পরে রুশ নৌবাহিনীর একটি নৌকায় তা হাতবদল হয়। কিছু পাঠানো হয় ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এয়ারলাইন্সে।

ইরান দক্ষিণ সীমান্তে কাস্পিায়ান সাগর। অন্যদিকে কাস্পিয়ান সাগরের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে রাশিয়া। এই পথে মস্কো-তেহরানের যোগাযোগকে অনেকটা সহজ করে তুলেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত