অনলাইনে পর্যটকদের আফগানিস্তান ঘুরিয়ে দেখান ফাতিমা হায়দারি

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশ ছেড়ে ইতালি চলে যান ফাতিমা হায়দারি। এখন সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পাশাপাশি জুম অ্যাপের মাধ্যমে পর্যটকদের নিজ শহর হেরাত ঘুরিয়ে দেখান তিনি।

আফগানিস্তানে থাকতে দেশটির প্রথম নারী পর্যটন গাইড হিসেবে কাজ করেছেন হায়দারি। সেজন্য তাকে স্থানীয় নেতাদের গালমন্দ শুনতে হয়েছে। ছেলেরা রাস্তায় তাকে পাথরও ছুড়ে মেরেছে।

ব্রিটিশ ট্যুর অপারেটর ‘আনটেমড বর্ডার্স’র মাধ্যমে এখন ভার্চুয়াল গাইডের কাজ করছেন হায়দারি। ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও ভারতের পর্যটকরা এভাবে হেরাত ঘুরে দেখছেন। আর এর মাধ্যমে হওয়া হায়দারির আয়ের এক-তৃতীয়াংশ আফগানিস্তানে গোপনে গড়ে তোলা মেয়েদের ইংরেজি শেখার ক্লাসে ব্যয় করা হয়।

হায়দারি নিজে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছেন। আফগানিস্তানের পাহাড় ঘেরা ঘোর এলাকায় বড় হয়েছেন তিনি। পরিবারের সাত সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। মা-বাবা তাকে ভেড়া দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছিল।

এএফপিকে তিনি বলেন, ভেড়াকে ঘাস খাওয়াতে আমি নদীর পাড়ে চলে যেতাম। সেখানে ছেলেদের একটা স্কুল ছিল। গোপনে আমি ক্লাস শুনতাম। কলম ছিল না বলে বালু বা কাদায় লিখতাম।

ফাতিমা হায়দারির বয়স যখন ১০ তখন তার দরিদ্র পরিবার হেরাত শহরে চলে যায়। সেখানে তাকে স্কুলে পাঠানোর মতো যথেষ্ট অর্থ ছিল না তার মা-বাবার। ৩ বছর রাতের বেলায় ঐতিহ্যবাহী কাপড় তৈরিসহ অন্যান্য কাজ করে স্কুল খরচ ও টেক্সট বই কেনার টাকা জোগাড় করেছেন হায়দারি।

এরপর মা-বাবাকে বুঝিয়ে ২০১৯ সালে হেরাতের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা পড়া শুরু করেছিলেন। হায়দারি বলেন, তারা চেয়েছিল আমি ভালো গৃহিণী হই। কিন্তু বড় দুই বোনের মতো হতে চাইনি আমি।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে অন্য ২০ জন শরণার্থী শিক্ষার্থীর সঙ্গে ইতালির মিলানের বোককোনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। সেখানে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করছেন হায়দারি।