ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

২৩ ডলার চুরির জন্য ১৪ বছর গুহাবাস!

২৩ ডলার চুরির জন্য ১৪ বছর গুহাবাস!

চুরি করে গা-ঢাকা দেয়ার প্রবণতা চোরদের কাছে নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। মানববসতি, ব্যাংক বা বিভিন্ন জ্বালানি স্টেশনে চুরি-ডাকাতির খবর অহরহই শোনা যায়। লাখ লাখ টাকা, স্বর্ণ বা মূল্যবান জিনিস চুরি করে কিছুদিনের জন্য প্রায়ই আত্মগোপনে চলে যায় দৃষ্কৃতকারীরা।

তবে, চুরির অর্থের পরিমাণ যদি হয় মাত্র ২৩ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় আড়াই হাজার টাকারও কিছু কম, তাহলে মোটামুটি অবস্থা সম্পন্ন কোনো মানুষ খুব একটা বিচলিত হবেন না। তবে, এই অর্থ চুরি করে কেউ যদি ১৪ বছরের জন্য গুহাবাসে চলে যায়, নিঃসন্দেহে অনেকে অবাক হবেন।

এরকমই অদ্ভূত এক ঘটনা ঘটেছে চীনের হুবেই প্রদেশে। ২০০৯ সালে একটি গ্যাস স্টেশন থেকে মাত্র ১৫৬ ইউয়ান বা প্রায় ২৩ ডলার চুরি করে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গা-ঢাকা দেয় প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাহাড়ের একটি গুহায়। কয়েক দিন বা মাস নয়, এমনকি অল্প কয়েক বছরের জন্যও নয়, একদম ১৪ বছরের জন্য গুহাবাসে থাকে সে।

চীনের হুবেই প্রদেশের এক গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ৩৫ বছর বয়সি লিউ মৌফু। শ্যালক ও আরেক সঙ্গী নিয়ে ২০০৯ সালে একটি গ্যাস স্টেশনে চুরি করে লিউ। চুরি করে পায় মাত্র ১৫৬ ইউয়ান, যার ৬০ ইউয়ানই খরচ হয় পালানোর পরে খাওয়া-দাওয়ায়। বাকি অর্থ ভাগাভাগির পর একেকজনের কাছে থাক মাত্র ৩২ ইউয়ান বা ৪৫০ টাকা।

পালানোর পরে তিনজন তিন জায়গায় আত্মগোপন করে। শিগগিরই লিউয়ের দুই সঙ্গীকে ধরে হাজতে নিয়ে যায় পুলিশ। উপায় না দেখে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করে সে। হাজতবাস থেকে বাঁচতে এরপর নিজের বানানো হাজতেই ১৪ বছর কাটায় সে!

এই ১৪ বছরে শুধু খাবার জোগাতে গুহা থেকে বের হতো সে। মাঝেমধ্যে নিজ বাসায় ঢুকে মাংস, আলুসহ বিভিন্ন খাবার চুরি করে কয়েক মিনিটের জন্য ঘুমন্ত বাবা-মাকে দেখে আবার গুহায় ফিরত। এই কারণে ছেলের বিয়ে, এমনকি বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতেও যেতে পারেনি সে। অবশেষে ৫০ বছর বয়সে এসে একাকীত্ব আর সহ্য না করতে পেরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে ।

আত্মসমর্পণ করে লিউ বলে, আমার একটি ফুটফুটে নাতি আছে, আমার বউয়েরও শারীরিক অবস্থা ভালো না। এখন স্বাভাবিক জীবন চাই আমি।

তবে, দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও শাস্তি থেকে রেহাই দেয়া হয়নি তাকে। ১৪ বছর পালিয়ে নিজসৃষ্ট কারাগারে থেকে এবার ৩ বছরের সত্যিকার কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাকে। এতদিন তার পরিবার তার গুহার ঠিকানা জানত কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত