বাসন ধোয়া জয়রামের আয় এখন ৩০০ কোটি

প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

এক সময় যে হাতে হোটেলে থালাবাসন সাফ করতেন, সেই হাত দিয়েই গুনেছেন গোছা গোছা টাকা। গরিব ঘরের ছেলে থেকে জয়রামের কোটিপতি হওয়ার কাহিনি সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। কর্নাটকের মেঙ্গালুরুর উদুপিতে জন্ম জয়রামের। বাবা ছিলেন গাড়িচালক। গরিবের সংসারে বেড়ে ওঠা তার। পড়াশোনায় তেমন ভাল ছিলেন না। স্কুলের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেই কড়া শাসন করতেন বাবা। এই বকুনিই যেন তাকে আগামী দিনের পথ দেখিয়েছে। একবার পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন জয়রাম। বাবার বকুনির ভয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান। তখন তার বয়স মাত্র ১৩ বছর। বাবার পকেট থেকে কিছু টাকা নিয়ে মেঙ্গালুরু থেকে বাসে চড়ে সোজা মুম্বাই পাড়ি দেন জয়রাম। সেই থেকে শুরু হলো নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লড়াই। ওই সময় অনেকেই কাজের জন্য মুম্বাই পাড়ি দিয়েছিলেন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে সেই সময় একটি হোটেলে কাজ শুরু করেন। ওই হোটেলে থালাবাসন পরিষ্কার করতেন জয়রাম। এজন্য পারিশ্রমিক পেতেন ১৮ টাকা। হোটেলে কাজ করার সময়ই জয়রাম জানতে পারেন, মুম্বাইয়ে দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের রেস্তোরাঁ খোলা হচ্ছে। নিজে দক্ষিণ ভারতীয় হওয়ায় তিনিও এ ধরনের রেস্তোরাঁ খোলার পরিকল্পনা করেন। তবে, মুম্বাই বদলে চলে যান দিল্লিতে। দিল্লিতে তার পরিকল্পনা প্রথমে সফল হয়নি। নিরামিষ খাবারের রেস্তোরাঁ খুলতে চেয়েছিলেন জয়রাম। ওই সময় দিল্লিতে একটি উদুপি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন তার এক ভাই। ১৯৭৪ সালে দিল্লিতে আসার পর সেন্ট্রাল ইলেক্ট্রনিক্সের ক্যান্টিনের টেন্ডার নেন জয়রাম। এরপর ১৯৮৬ সালে দিল্লির ডিফেন্স কলোনিতে নিজের রেস্তোরাঁ খোলেন জয়রাম। নাম দেন ‘সাগর’। যা কিছু সঞ্চয় ছিল, তা দিয়ে প্রথম রেস্তোরাঁ খোলেন তিনি। ওই সময় তাকে সাহায্য করেছিলেন বন্ধু-পরিজন। সেই সময় রেস্তোরাঁর ভাড়া মেটাতে হতো জয়রামকে। সপ্তাহে দিতে হতো ৩ হাজার ২৫০ টাকা। রেস্তোরাঁয় ৪০ জন একসঙ্গে বসতে পারতেন। প্রথম দিন বিক্রি করে পেয়েছিলেন ৪৮০ টাকা। ওই সময় দিল্লিতে দক্ষিণ ভারতীয় খাবার খেতে লোকে ‘উডল্যান্ড’, ‘দাসপ্রকাশ’ রেস্তোরাঁয় যেতেন। ক্রেতাদের কাছে টানতে নতুন চাল চালেন জয়রাম। ‘উডল্যান্ড’ রেস্তোরাঁটি কিনে ফেলেন তিনি। পরে ওই সেটির নাম বদলে রাখেন ‘সাগর রত্ন’। সেই থেকে শুরু হয় ‘সাগর রত্ন’ রেস্তোরাঁর পথচলা, যা পরবর্তী সময়ে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। উত্তর ভারতের ‘দোসা কিং’ বলা হতে থাকে জয়রামকে।