সিডনির রাত্রিকালীন মার্কেট রমজান ঘিরে জমজমাট

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

সিডনির ল্যাকেম্বাতে রমজানের রাত্রিকালীন মার্কেটগুলো দারুণ লাগে ফাউজান আহমেদের কাছে। উৎসবমুখর রাতটি সময়ের সঙ্গে আরো জমজমাট হয়ে ওঠে। শুধু ফাউজান আহমেদই নয়, সিডনির মুসলমানদের কাছে শহরতলীর এ আয়োজনের জনপ্রিয়তা ভীষণ। রমজান ঘিরে হ্যালডন স্ট্রিটে এ ভিড় কেবল মুসলিমদের নয়, অনেক অমুসলিমও উপভোগ করে উৎসবমুখর রাত।

গোটা রমজানজুড়ে প্রতি রাতে এখানে বসে নানা দোকান। উটের বার্গার থেকে তান্দুরি মুরগি... আছে কাশ্মীরি চা, নাফেহের (মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহ্যবাহী খাবার যা পেস্ট্রি দিয়ে তৈরি)। স্বাদে এসব অতুলনীয়। ল্যাকেম্বায় দারুসসালাম নামে একটি বইয়ের দোকানের ম্যানেজার ফাউজান। তিনি জানান, দুই বছর আগে যখন স্থানীয় কাউন্সিল এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, তখন থেকে পরিস্থিতি বদলে যায়। ফাউজান বলেন, এটি মুসলমানদের মধ্যে আর সীমাবদ্ধ নেই। আগে এখানে নামাজকে কেন্দ্র করে মানুষের সমাগম ঘটতো, লোকেরা নামাজ শেষ করে যখন বের হতো, রাস্তা তখন ভরে যেত। এখন সন্ধ্যা নামলেই মানুষের ঢল নামে। রমজান এমন একটি মাস যখন মুসলমানরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস করে, আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় বিভিন্ন ধরনের আত্মসংযম অনুশীলন করে। এই রমজানকে কেন্দ্র করে মসজিদ ঘিরে দোকানগুলো বসে। প্রায় এক দশক আগে হ্যালডন স্ট্রিটে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান বসে। মুসলমানদের প্রার্থনা শেষ হওয়ার পর গভীর রাতে তাদের খাবার ও বসার জায়গা সরবরাহ করে থাকত তারা। দুই বছর আগে ক্যান্টারবেরি-ব্যাঙ্কটাউন কাউন্সিল এ আয়োজনে যুক্ত হয়। তারা রাস্তা বন্ধ করে দোকান বসানোর অনুমতি দেয়। বাজার নিয়ে নানা প্রচারও চালাতে থাকে তারা। কর্তৃপক্ষের এ কৌশল কাজে লেগেছে। ধর্মণ্ডবর্ণ নির্বিশেষে শহরের হাজার হাজার মানুষ রমজানের সময় এখানে উপস্থিত হয়। মুসলিম সম্প্রদায়ের সবাই অবশ্য এ উদ্যোগে খুশী নন।

ফাউজান বলেন, এটি এমন কিছু যা আমাদের আর নেই। রমজান আমাদের কাছে আধ্যাত্মিক মাস। লোকেরা ল্যাকেম্বা মসজিদে রাতে রমজানের নামাজ পড়তে আসে। বাজারের জনপ্রিয়তার কারণে এখন তারা ট্র্যাফিক এবং পার্কিং নিয়ে লড়াই করে। তিনি বলেন, এখানে আসা অধিকাংশই অমুসলিম। আমি এটাকে খারাপ চোখে দেখছি না। তবে এমন আয়োজন না করে রমজানের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করার ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হতো।

তবে স্থানীয় রেস্তোরাঁ মালিকদের কাছে বাজারের সম্প্রসারণ ব্যবসার জন্য আশীর্বাদ প্রমাণ হয়েছে। হ্যালডন স্ট্রিটের দোকান এক্সট্রা ক্রিস্পির মালিক ও ম্যানেজার সেলিম শেখ বলেন, এটা ল্যাকেম্বার জন্য ভালো, হ্যালডন স্ট্রিটের জন্য ভালো, আমাদের সবার জন্য ভালো। বাণিজ্যিকীকরণ হয়ে গেলেও, আয়োজনটি সবার জন্যই হওয়া উচিত।