ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

৫০০ দিন গুহায় কাটালেন স্প্যানিশ অ্যাথলেট

৫০০ দিন গুহায় কাটালেন স্প্যানিশ অ্যাথলেট

একটি গুহায় টানা ৫০০ দিন কাটিয়ে বের হয়েছেন স্পেনের অ্যাথলেট বেয়াত্রিজ ফ্লামিনি। গত শুক্রবার তিনি গুহা জনসম্মুখে আসেন। এর মধ্যে পৃথিবীতে ঘটে গেছে কত শত ঘটনা। দীর্ঘদিন মানবসমাজ থেকে দূরে থাকায় সেসবের কিছুই জানেন না ফ্লামিনি। এদিকে, তার এ অসাধারণ কীর্তিতে রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফ্লামিনির বয়স ৫০ বছর। ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর স্পেনের গ্রানাডা শহরের একটি গুহায় প্রবেশ করেছিলেন তিনি। তখন বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি চলছে।

অনেকে ভাবতে পারেন, করোনা যাতে শরীরে বাসা বাঁধতে না পারে তার জন্যই গুহায় বসবাস শুরু করেন ফ্লামিনি। না, মূলত একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার অংশ হিসেবেই প্রায় দুই বছর গুহায় কাটিয়ে দেন তিনি।

৫০০ দিনের পুরো সময় তাকে নজরদারিতে রেখেছিলেন অন্য গবেষকরা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, মানুষের ওপর সামাজিক বিচ্ছিন্নতার প্রভাব খতিয়ে দেখা। এছাড়া কোনো স্থানে একা থাকার ফলে সময় সম্পর্কে মানুষের ধারণায় সাময়িক সময়ের জন্য কী ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, তা পরীক্ষা করে দেখা।

ফ্লামিনি যে গুহায় ছিলেন, সেটির গভীরতা ২৩০ ফুট। সেখানে প্রবেশের সময় তার বয়স ছিল ৪৮ বছর। গুহায় বসবাস করা পুরো সময় তিনি ব্যায়াম করে, ছবি এঁকে ও উলের টুপি বুনে কাটিয়েছেন। তাছাড়া সময় কাটানোর জন্য তাকে দেয়া হয়েছিল ৬০টি বই। ব্যবহারের জন্য পেয়েছিলেন ১ হাজার লিটার পানি।

স্পেনের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, ফ্লামিনি গুহাটি থেকে বেরিয়ে এসে সহকর্মীদের জড়িয়ে ধরেন। সাংবাদিকদের বলেন, গুহার ভেতরে বসবাস করার অভিজ্ঞতা ছিল চমৎকার। তবে এতদিনে পৃথিবীতে কী কী হয়েছে বা হচ্ছে, তার কিছুই আমি জানি না। আমি এই দেড় বছর কারও সঙ্গে কথা বলিনি। শুধু নিজের সঙ্গে কথা বলতাম। এমনকি, আমি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলাম, যদিও এটা পরীক্ষা করে দেখতেই আমাকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল।

ফ্লামিনি আরও বলেন, দুই মাস পর আমার সময় গণনা এলোমেলো হয়ে যায়। একসময় সময় গোনা বন্ধ করে দিই। তাই গুহা থেকে বের হওয়ার সময় আমার মনে হয়েছিল, আমি ১৬০ থেকে ১৭০ দিন গুহায় ছিলাম।

সংশ্লিষ্ট গবেষণা করা দলটি মনে করছে, সবচেয়ে দীর্ঘ সময় গুহায় কাটিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখাবেন ফ্লামিনি। তবে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি গিনেস কর্তৃপক্ষ। তবে টানা এত দিন গুহায় কাটানোর এ ঘটনাকে বিশ্ব রেকর্ড বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত