ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উত্তপ্ত মণিপুর থেকে প্রাণে বাঁচতে বিমানবন্দরে ভিড় বাসিন্দাদের

উত্তপ্ত মণিপুর থেকে প্রাণে বাঁচতে বিমানবন্দরে ভিড় বাসিন্দাদের

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর থেকে পালিয়ে যেতে চাইছেন অনেকেই। ফলে তিল ধারণের ঠাঁই নেই ইম্ফল বিমানবন্দরে। যদিও মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং জানিয়েছেন, সেখানে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। সব কিছু দ্রুত স্বাভাবিক করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

মণিপুরের সব এলাকায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। কিন্তু সেই রাজ্যের মানুষ এখনো সেখানকার প্রশাসনের ওপর ভরসা করতে পারছেন না। তাই অনেকেই এখন যেতে চাইছেন বাইরে। সেই কারণে এখন বিমানবন্দরে ভিড় করেছেন বাসিন্দারা। ইম্ফল বিমানবন্দরে জায়গা এমনিতেই কম। স্বাভাবিক সময়ে সেখান থেকে দিনে ২৮টি বিমান ওঠানামা করে। এখন যাত্রী চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিমানের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। গত সোমবার সেখান থেকে ওঠানামা করেছে ৮০টি বিমান। কিন্তু তাতেও সামাল দেয়া যাচ্ছে না। ইম্ফল থেকে গুয়াহাটি, কলকাতার বিমান ভাড়া কয়েক গুণ বাড়ানো হচ্ছে। সেই বাড়তি টাকা দিয়েই এখন টিকিট কেটে মণিপুর ছাড়তে চাইছেন অনেকে।

সেই কারণে ইম্ফল বিমানবন্দরকে নিরাপদ স্থান মনে করে মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে সেখানে। সেখানে যারা অপেক্ষা করছেন তাদের মধ্যে আছে শিশু, বৃদ্ধ এবং শারীরিকভাবে অসুস্থরা। বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, আইসিইউ থেকে সদ্য বের হওয়া রোগী, নবজাতক, গর্ভবতী ছাড়াও অনেক নারী এখন সেখানে অপেক্ষা করছেন। তাদের অনেকেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাইরে চলে যেতে চাইছেন। এক কর্মকর্তা বলেন, এখানের টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে খুব বেশি হলে ৭৫০ জন থাকতে পারেন, আমাদের এখানে ২৫০ জনের আসা এবং ৫০০ জন বাইরে যাওয়ার যাত্রী সামাল দেয়ার ক্ষমতা আছে। কিন্তু এখন বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন প্রায় ২ হাজার মানুষ। সেখানে এই অতিরিক্ত যাত্রী থাকার ফলে যাতে কোনোরকম সমস্যা না হয়, সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। সেখানে চিকিৎসক রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে অপেক্ষারত ওই ব্যক্তিদের জন্য খাবার ও পানির ব্যবস্থা করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

এখনো মণিপুরে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে। তাই যাত্রীদের টিকিট দেয়া জন্য বিশেষ একটি কাউন্টার করা হয়েছে সেখানে। এএআই’র উত্তরপূর্ব অঞ্চলের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস জুগানি জানান, সেখানে ওই যাত্রীদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, সেখানে মানবিকতার কারণে এত ব্যক্তিকে থাকতে দেয়া হয়েছে। আমাদের কর্মীরা নিরলস কাজ করছে সেখানে। সেখানে একটি হেল্প ডেস্কও চালু করা হয়েছে। এদিকে সেখানেও দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালানোর চেষ্টা করে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু তারা বিমানবন্দরে ঢুকতে পারেনি। মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেয়ার সুপারিশ করে কেন্দ্রের আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি লিখতে হাইকোর্ট মণিপুর সরকারকে নির্দেশ দেয়ার পর থেকেই রাজ্যে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। এ বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ওই রাজ্যের মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত