ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চীনকে ইউক্রেন

ভূখণ্ডের বিনিময়ে শান্তি চাই না

ভূখণ্ডের বিনিময়ে শান্তি চাই না

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতা করতে চীনের নিয়োগ দেয়া বিশেষ দূত ইউক্রেন সফর করেছেন। সফরে তিনি ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, ভূখণ্ড ছাড় দিয়ে কোনো শান্তি পরিকল্পনা তারা মেনে নেবে না। অবশ্য কিয়েভের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বেইজিংয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউক্রেনের এমন অনড় অবস্থানের কারণে চীনের শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে।

ইউক্রেনীয় রাজধানী কিয়েভে চীনের বিশেষ লি হুই সংঘাত অবসানে বেইজিংয়ের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া আক্রমণের পর ইউক্রেনে যাওয়া সবচেয়ে সিনিয়র কূটনীতিক তিনি।

ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার সম্মানের ওপর শান্তি নির্ভর করছে।

লি’র সঙ্গে বৈঠকে কুলেবা জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন এমন কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করবে না যাতে ভূখণ্ড হারাতে হয়। তবে পারমাণবিক নিরাপত্তা এবং কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে শস্য রফতানি পুনরায় শুরু করার বিষয়ে চীনা মধ্যস্থতা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

গত বুধবারের বৈঠকটি এমন সময় হলো যখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, কৃষ্ণ সাগরের শস্যচুক্তির মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বব্যাপী শস্য বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে জেলেনস্কি টেলিফোনে কথা বলার তিন সপ্তাহ পর লি গত মঙ্গলবার কিয়েভে পৌঁছেছেন। সংঘাত অবসানের জন্য বেইজিংয়ের পরিকল্পনার প্রচারের জন্য ইউরোপীয় সফরের অংশ হিসেবে ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে দুই দিনের আলোচনার জন্য তিনি এসেছিলেন।

মঙ্গলবার কিয়েভ সতর্ক করে বলেছিল, শুধু মধ্যস্থতা করার জন্য মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউক্রেনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনের ভূখণ্ডের বিনিময়ে যে কোনো সমঝোতা কোনো কাজে আসবে না।

বেইজিং বলছে, লি’র এই সফরের উদ্দেশ্য হলো ইউক্রেন সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা।

মার্চ মাসে মস্কো সফর করেন চীনা প্রেসিডেন্ট। ফেব্রুয়ারি থেকেই চীনকে একটি নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বেইজিং।

ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধে চীনের ভূমিকা জটিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে চীন। একই সঙ্গে তারা রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরোপের সমালোচনা করেছে। আবার রাশিয়াকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে, গভীর হচ্ছে দুই দেশের সম্পর্ক।

মস্কো-কিয়েভের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ১২ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে চীন। এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত