ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জটিল হচ্ছে অভিবাসীদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব অর্জন

জটিল হচ্ছে অভিবাসীদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব অর্জন

অভিবাসনের ক্ষেত্রে কঠোর শর্তারোপ করে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ব্রিটেন। প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুসারে, অভিবাসীদের ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পেতে আগের চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে নাগরিকত্বের আগে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি বা ইনডিফিনিট লিভ টু রিমেইনের আবেদনের জন্য টানা পাঁচ বছর নির্দিষ্ট ভিসায় ব্রিটেনে বসবাসের নিয়ম প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু এ সময়সীমা পাঁচ থেকে বাড়িয়ে আট বছর করার পরিকল্পনা করছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বড় পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে- আবেদনকারীকে ব্রিটেনে ন্যূনতম দুই বছরের কাজ অথবা লেখাপড়ার প্রমাণ দিতে হবে। একই সঙ্গে আবেদনকারী আবেদনের আগের ১০ বছর কোনো মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি স্থায়ী বসবাসের জন্য যোগ্যতা হারাবেন। এছাড়া বর্তমানে ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের জীবনধারার ওপর পরীক্ষা প্রয়োজন হতো না। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে তাদের জন্যও ‘লাইফ ইন দ্য ইউকে’ পরীক্ষার বিধান রাখা হচ্ছে বলে রোববার ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গত সপ্তাহে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছিলেন, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা তার মূল লক্ষ্যগুলোর একটি। এর পর এই কড়াকড়ি আরোপের প্রস্তাবের বিষয়টি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম উঠে এসেছে।

ব্রিটেনের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী বছর অনুষ্ঠেয় ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে অভিবাসন-বিরোধী ব্রিটিশ ভোটারদের নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে টানতে এমন নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সুনাক। লুটনের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ও ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাবের ট্রেজারার মাহবুবুল করীম সুয়েদ বলেন, অভিবাসনের উদ্দেশ্যে ব্রিটেনে আসা নৌকাবোঝাই মানুষদের ফিরিয়ে দেওয়া বা নতুন করে দেশটিতে বসবাসরতদের জন্য শর্তারোপের মূল উদ্দেশ্য আগামী নির্বাচনে অভিবাসন-বিরোধী ভোট নিজেদের পক্ষে টানা। এমন একজন প্রধানমন্ত্রীর আমলে এমন পদক্ষেপ সরকার নিচ্ছে, যেখানে খোদ প্রধানমন্ত্রীর পরিবারই ছিলেন অভিবাসী। ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ব্রিটিশ নাগরিক হওয়া একটি মর্যাদা, কোনো অধিকার নয়। যারা এই মর্যাদার অধিকারী হবেন তাদের ব্রিটেনের জন্য অবদান রাখা আবশ্যক। ব্রিটেনে বসবাস ও নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বড় ধরনের পরিবর্তনের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে লন্ডনের লেক্সপার্ট সলিসিটর্সের ব্যারিস্টার শুভাগত দে বলেন, দেশে দেশে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে যে প্রক্রিয়া চলমান ছিল ব্রিটেনের ক্ষেত্রে ব্রেক্সিট, করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তা নতুন করে গতি পেয়েছে। সরকার চাইছে নতুন করে যারা দেশটিতে স্থায়ী বসবাস ও নাগরিকত্বের সুযোগ পাবেন, তারা যেন সরকারের বাড়তি বোঝার কারণ না হন। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে তারা যেন ব্রিটেনের জন্য অবদান রাখতে পারেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত