ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অনিশ্চয়তার মুখে সোমালিয়া

অনিশ্চয়তার মুখে সোমালিয়া

সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়ন ট্রানজিশন মিশন বা এটিএমআইএস ২০২৪ সালের শেষের দিকে সমাপ্ত হয়ে গেলে দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্রুত পতন অবশ্যম্ভাবী বলে সতর্ক করেছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এটি প্রতিরোধে দেশটির উপর জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার কথা বলছেন তারা। সোমালি কর্তৃপক্ষ এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে বলেছেন, এটিএমআইএস এই বছরের ৩০ জুনের মধ্যে তাদের দুই হাজার সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে। খবর ভয়েস অব আমেরিকার। মোগাদিশুর একটি নিরাপত্তা সংস্থা ঈগল রেঞ্জ সার্ভিসেসের প্রতিষ্ঠাতা এবং সোমালিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক উপ-প্রধান আবদিসালাম ইউসুফ গুলেদ হচ্ছেন তাদেরই একজন যারা বিষয়টি নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গুলেদ বলেছেন, ‘আমার একটি বিরাট উদ্বেগ রয়েছে যে, সোমালিয়া থেকে যদি আফ্রিকান ইউনিয়নের সৈন্যরা চলে যায়, তবে সোমালিয়া আরেকটি আফগানিস্তানে পরিণত হতে পারে, যদি সোমালিয়া শক্তিশালী এবং অস্ত্রে সুসজ্জিত নিরাপত্তা বাহিনী না পায় যাদের আন্তর্জাতিক তহবিল রয়েছে এবং এটিএমআইএস’র মতো সমর্থন রয়েছে।’ গত সপ্তাহে সোমালি সরকার বলেছে, তারা এটিএমআইএস থেকে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত, কারণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ২৬২৮ এবং ২৬৭০ অনুযায়ী তাদের দেশ থেকে দুই হাজার সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। এ সপ্তাহে, এটিএমআইএস এবং সোমালিয়ায় ইউএন সাপোর্ট অফিসের সঙ্গে একটি প্রযুক্তিগত দল নিযুক্ত করা হয়েছে, যেটি এটিএমআইএস ত্রুটির বাস্তবায়নের তদারকি করবে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সোমালিয়া থেকে আফ্রিকান ইউনিয়নের সৈন্যদের দ্রুত প্রত্যাহার করলে, সোমালি সরকারের দ্রুত পতন ঘটতে পারে, যেমনটি আফগানিস্তানে ঘটেছিল যখন ২০২১ সালের আগস্টে আমেরিকান সেনারা চলে যায়। সাবেক সোমালি গোয়েন্দা কর্মকর্তা কর্নেল আবদুল্লাহি আলি মাও বলেছেন, ‘আমি এ কথা উড়িয়ে দিতে পারি না যে, সোমালিয়ায় অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে পারে, যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সোমালি সেনাবাহিনীকে বেতন এবং অস্ত্রের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সমর্থন না করে।’ সোমালিয়া বলেছে, এ পর্যন্ত তারা তিন হাজারের বেশি জঙ্গিকে হত্যা করেছে এবং অভিযান সফল হয়েছে। তবে জঙ্গি গোষ্ঠী এটিকে ‘একটি ব্যর্থ অভিযান’ বলে অভিহিত করেছে। সোমালি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আল-শাবাবের বিরুদ্ধে আক্রমণের পরবর্তী পর্যায়ে সোমালিয়াকে সমর্থনকারী আঞ্চলিক বাহিনী শীঘ্রই যে কোনো সময় মোতায়েন হওয়ার জন্য প্রস্তুত। মোগাদিশুতে গত ১ ফেব্রুয়ারি, সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহামুদ একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেন। ওই সম্মেলনে তিনটি দেশ এবং সোমালিয়ার নেতাদের মধ্যে একটি চুক্তি অনুসরণ করে সেনা মোতায়েন করা হয়। নতুন পর্যায়ের লক্ষ্য হচ্ছে মধ্য শাবেল এবং জুব্বা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আল শাবাব নিয়ন্ত্রিত দেশের অবশিষ্ট অংশ থেকে আল শাবাবকে বিতাড়িত করা। সোমালিয়া থেকে এটিএমআইএস’র সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের আগে আল-শাবাবকে পরাজিত বা অন্তত দুর্বল করার চলমান সামরিক প্রস্তুতির অংশ হিসাবে, সিনিয়র এটিএমআইএস কমান্ডাররা শুক্রবার শীর্ষ আমেরিকান সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত